Kalyani University Suggestion

Kalyani University B.A 4th Semester Political Science Major 4 NEP 1st Paper Suggestion 2025

INDIAN POLITICAL THOUGHT- (MODERN)

Course Code: POL-M-T-4

Kalyani University B.A 4th Semester Political Science Major 4 NEP 1st Paper ছোট প্রশ্ন, বড়ো প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন PDF টি পেতে.. আপনি 150 টাকা পেমেন্ট করুন। পেমেন্টের পর এক সেকেন্ডের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত সাজেশনটি পাবেন। ধন্যবাদ। টাকা টি পেমেন্ট করার জন্য নিচে PAY বাটনে ক্লিক করুন।

অথবা আপনি চাইলে সরাসরি PhonePe-এর মাধ্যমে 150 টাকা পেমেন্ট করে সাজেশন সংগ্রহ করতে পারেন। PhonePe নম্বর: 6295668424 (পেমেন্টের পর স্ক্রিনশট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠালে PDF COPY পাঠিয়ে দেব।)

My Phone Number- 6295668424

• এই সাজেশনের বড়ো প্রশ্ন সংখ্যা 30 টি।
ছোট প্রশ্ন প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন পাবেন।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজেশনেরর বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজেশনের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.

(সিলেবাস – ২০২৫)

ইউনিট ১: রামমোহন রায়
আইনের শাসন, অধিকার, চিন্তার স্বাধীনতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি।

ইউনিট ২: স্বামী বিবেকানন্দ
সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ, সমাজ ও শিক্ষা বিষয়ে তাঁর মতামত।

ইউনিট ৩: সৈয়দ আহমদ খান ও মুহাম্মদ ইকবাল
ঔপনিবেশিকতা ও জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি।

ইউনিট ৪: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
জাতীয়তাবাদের সমালোচনা এবং আন্তর্জাতিকতা নিয়ে তাঁর চিন্তাধারা।

ইউনিট ৫: এম. এন. রায়
জাতীয় ও ঔপনিবেশিক প্রশ্ন এবং উগ্র মানবতাবাদ (Radical Humanism) নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি।

ইউনিট ৬: বি. আর. আম্বেদকর
সামাজিক ন্যায়বিচার ও সাংবিধানিকতা সম্পর্কে তাঁর মতামত।

ইউনিট ৭: পণ্ডিতা রমাবাই
লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক ন্যায়বিচার সংক্রান্ত তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি।

ইউনিট ৮: পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু
সমাজতন্ত্র নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি।

ইউনিট ৯: রাম মনোহর লোহিয়া
সমাজতন্ত্র সম্পর্কিত তাঁর মতামত।

এখানে কয়েকটি প্রশ্নোত্তর উদাহরণ হিসেবে দেওয়া হল। সম্পূর্ণ সাজেশন PDF কপি প্রয়োজন হলে BUY করতে পারো।

ইউনিট ১: রামমোহন রায়

*****1) প্রশ্ন. রামমোহনের স্বাধীনতার ধারণাটি সংক্ষেপে আলোচনা কর।৫

উত্তর: |রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩) ছিলেন নবজাগরণের পথিকৃৎ, একজন সমাজসংস্কারক, চিন্তাবিদ এবং সাংবাদিক। তিনি শুধু ধর্ম ও সমাজ সংস্কারেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না, বরং রাজনীতি ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ঔপনিবেশিক শাসনের কঠোরতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে রামমোহনের স্বাধীনতার ধারণা ছিল প্রগতিশীল, যুক্তিনির্ভর ও মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ। তাঁর স্বাধীনতার ভাবনা শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বাধীনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি সামাজিক, ধর্মীয়, ও বৌদ্ধিক মুক্তির দিকেও প্রসারিত ছিল।

১. স্বাধীনতার বৌদ্ধিক ধারণা: রামমোহনের স্বাধীনতার মূল ভিত্তি ছিল "বৌদ্ধিক মুক্তি" বা চিন্তার স্বাধীনতা। তাঁর মতে, মানুষ যদি নিজে চিন্তা করতে না পারে, যুক্তি প্রয়োগ করতে না পারে, তবে সে প্রকৃত অর্থে স্বাধীন হতে পারে না। এজন্যই তিনি ধর্মীয় কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও গোঁড়ামির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন একটি যুক্তিবাদী সমাজ, যেখানে মানুষ নিজের বিবেক ও জ্ঞানের আলোকে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

২. ধর্মীয় স্বাধীনতা: রামমোহনের মতে, ধর্ম মানুষকে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত করার পরিবর্তে যদি বিভাজনের কারণ হয়, তবে তা সংস্কারের দাবি রাখে। তিনি একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী ছিলেন এবং হিন্দুধর্মের শুদ্ধতম রূপ প্রচারের জন্য ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর মতে, প্রতিটি মানুষেরই ধর্ম পালনের অধিকার থাকা উচিত—কিন্তু সেই ধর্ম যেন মানবিকতা ও যুক্তিবোধে পরিপুষ্ট হয়। এই চিন্তা ধর্মীয় স্বাধীনতার এক গভীর ব্যাখ্যা।

৩. নারী স্বাধীনতা ও সমাজ সংস্কার: রামমোহন বিশ্বাস করতেন, কোনও সমাজ তখনই স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে, যখন তার সমস্ত সদস্য—নারী ও পুরুষ উভয়েই—সমান অধিকার ভোগ করে। তিনি সতীদাহ প্রথা, বহু বিবাহ ও নারী নিগ্রহের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন এবং ব্রিটিশ সরকারের সাহায্যে সতীদাহ প্রথা বন্ধে সফল হন। তাঁর এই কর্মপ্রচেষ্টা নারীর সামাজিক স্বাধীনতার এক বাস্তব দৃষ্টান্ত।

৪. শিক্ষার মাধ্যমে স্বাধীনতা: রামমোহনের মতে, শিক্ষা হল মুক্তির প্রধান হাতিয়ার। তিনি বাংলায়, ইংরেজিতে ও সংস্কৃতে আধুনিক শিক্ষা প্রসারের পক্ষে ছিলেন। তিনি চাইতেন বিজ্ঞান, গণিত, যুক্তিবিদ্যা ও দর্শনের মাধ্যমে মানুষ তার নিজের চিন্তা ও মূল্যবোধ গড়ে তুলুক। তাঁর প্রতিষ্ঠিত হিন্দু কলেজ (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি) এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। শিক্ষা মানুষকে অজ্ঞানতা ও পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে, এমনটাই ছিল রামমোহনের বিশ্বাস।

৫. রাজনৈতিক স্বাধীনতার ধারণা: যদিও রামমোহন সরাসরি ইংরেজ শাসনের বিরোধিতা করেননি, তবুও তিনি ব্রিটিশ প্রশাসনের প্রতি এক সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন। তিনি মনে করতেন, ব্রিটিশ শাসকগণ যদি ভারতীয়দের অংশগ্রহণ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনসঙ্গত অধিকার প্রদান না করে, তবে তা এক ধরনের রাজনৈতিক দাসত্ব। তিনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বিচারব্যবস্থার সংস্কার ও জনমতের গুরুত্বের কথা বারবার উচ্চারণ করেন। তাঁর এই প্রচেষ্টা ছিল ব্রিটিশ শাসনের মধ্যে থেকেও ভারতীয়দের আত্মমর্যাদার অধিকার আদায়ের জন্য।

৬. সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা: রামমোহন ভারতের সংবাদপত্র জগতে পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি "সমবাদ কৌমুদী", "মিরাত-উল-আখবার" প্রভৃতি পত্রিকা সম্পাদনা করেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা তাঁর স্বাধীনতার ধারণার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলে জনগণ সত্য জানবে না, সরকারের সমালোচনা করতে পারবে না এবং সমাজের পরিবর্তনও সম্ভব হবে না।

উপসংহার:

রামমোহন রায়ের স্বাধীনতার ধারণা ছিল বহুমাত্রিক—বৌদ্ধিক, ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক। তিনি শুধু শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা বলেননি, বরং সমাজ ও মানুষের চিন্তাভাবনায় স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার উপর জোর দেন। তাঁর দর্শন ও কর্মকাণ্ড আধুনিক ভারতের ভিত্তি নির্মাণে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আজও যখন আমরা স্বাধীনতার অর্থ নিয়ে ভাবি, তখন রামমোহনের চিন্তা আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়—স্বাধীনতা মানে কেবল শাসনমুক্তি নয়, বরং তা মানবিক, যুক্তিনিষ্ঠ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যম।

ইউনিট ২: স্বামী বিবেকানন্দ

*****2) প্রশ্ন. বিবেকানন্দের শিক্ষাচিন্তা সংক্ষেপে আলোচনা কর।৫ অথবা, শিক্ষা সম্পর্কে বিবেকানন্দের বক্তব্যের পর্যালোচনা কর। ১০

ভূমিকা:

স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩-১৯০২) ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর এক মহান ভারতীয় দার্শনিক, সমাজ সংস্কারক এবং আধ্যাত্মিক গুরু। তাঁর শিক্ষাচিন্তা কেবলমাত্র বইয়ের জ্ঞান অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি মানবিক মূল্যবোধ, চরিত্র গঠন এবং আত্মবিশ্বাস বিকাশের উপর গুরুত্বারোপ করে। তাঁর মতে, শিক্ষা হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তিকে জাগ্রত করে এবং তাকে স্বাবলম্বী ও নৈতিকভাবে উন্নত করে তোলে। এই নিবন্ধে আমরা বিবেকানন্দের শিক্ষাচিন্তার মূল দিকগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করব।

১. শিক্ষার লক্ষ্য: বিবেকানন্দের মতে, শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য হলো "মানুষ তৈরি করা"। তিনি বলতেন, "শিক্ষা হলো মানুষের মধ্যে বিদ্যমান ঐশ্বরিক সম্ভাবনার প্রকাশ।" তাঁর দৃষ্টিতে শিক্ষা কেবল পুঁথিগত বিদ্যা অর্জন নয়, বরং এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা মানুষকে আত্মবিশ্বাসী, নীতিবান এবং পরোপকারী করে গড়ে তোলে। শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তির মধ্যে আত্মজ্ঞান ও আত্মবিশ্বাসের বিকাশ ঘটানোই তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল।

২. চরিত্র গঠনের উপর গুরুত্ব: বিবেকানন্দ শিক্ষার ক্ষেত্রে চরিত্র গঠনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, প্রকৃত শিক্ষা তখনই সফল হয় যখন তা ব্যক্তির চরিত্রকে উন্নত করে। তিনি বলতেন, "এক আউন্স চরিত্র সমগ্র বিশ্বের সমস্ত জ্ঞানের চেয়েও মূল্যবান।" তাঁর মতে, জ্ঞান অর্জন তখনই অর্থবহ যখন তা নৈতিকতা ও সততার সঙ্গে যুক্ত হয়।

৩. স্বাবলম্বিতা ও আত্মনির্ভরশীলতা: |বিবেকানন্দের শিক্ষাদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো স্বাবলম্বিতা। তিনি ভারতীয় যুবকদের আত্মনির্ভরশীল হতে উৎসাহিত করতেন। তাঁর বিখ্যাত উক্তি, "উঠো, জাগো এবং লক্ষ্যে পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না।" এই বাণী যুবসমাজকে স্বাবলম্বী হতে অনুপ্রাণিত করে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, প্রকৃত শিক্ষা মানুষকে আত্মনির্ভরশীল করে তোলে, যাতে তারা সমাজের জন্য উপকারী ভূমিকা রাখতে পারে।

৪. ধর্মনিরপেক্ষ ও সার্বজনীন শিক্ষা: বিবেকানন্দের শিক্ষাচিন্তা ধর্মনিরপেক্ষ ও সার্বজনীন। তিনি সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের জন্য সমান শিক্ষার পক্ষপাতী ছিলেন। তাঁর মতে, শিক্ষা কোনো বিশেষ ধর্ম বা সম্প্রদায়ের জন্য সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। তিনি নারী শিক্ষারও পক্ষে ছিলেন এবং বিশ্বাস করতেন যে, নারীর শিক্ষাই পারে একটি উন্নত সমাজ গঠন করতে।

৫. মানবসেবাই ঈশ্বরের সেবা: বিবেকানন্দের শিক্ষাদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো "সেবাধর্ম"। তিনি বলতেন, "জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।" তাঁর মতে, প্রকৃত শিক্ষা মানুষকে সমাজসেবায় উদ্বুদ্ধ করে। তিনি শিক্ষার্থীদের শেখাতেন যে, জ্ঞান অর্জনের শেষ লক্ষ্য হওয়া উচিত মানবসেবা। দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মানুষের সেবা করাই হলো ঈশ্বরের সত্যিকারের উপাসনা।

৬. বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয়: বিবেকানন্দের শিক্ষাচিন্তায় বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয় দেখা যায়। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, বিজ্ঞান ও ধর্ম একে অপরের পরিপূরক। তাঁর মতে, শিক্ষা এমন হওয়া উচিত যা বিজ্ঞানমনস্কতা ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে। তিনি পাশ্চাত্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্ব স্বীকার করতেন, কিন্তু একই সঙ্গে ভারতীয় আধ্যাত্মিকতাকে বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন।

৭. শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষা: বিবেকানন্দ মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের পক্ষে ছিলেন। তিনি মনে করতেন, মাতৃভাষায় জ্ঞান অর্জন করলে তা সহজে হৃদয়ঙ্গম হয়। তিনি ইংরেজি শিক্ষার বিরোধী ছিলেন না, কিন্তু তিনি চাইতেন যে শিক্ষার মূল মাধ্যম যেন মাতৃভাষাই হয়। তাঁর এই চিন্তা আজও ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

৮. শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক: বিবেকানন্দ শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ককে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করতেন। তিনি গুরু-শিষ্য পরম্পরায় বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁর মতে, একজন আদর্শ শিক্ষক হচ্ছেন তিনি যিনি শুধু বইয়ের জ্ঞানই দেন না, বরং শিক্ষার্থীর চরিত্র গঠনেও সাহায্য করেন। তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলতেন, "শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলুন, তাদের ভিতরের শক্তিকে জাগ্রত করুন।"

৯. কর্মের মাধ্যমে শিক্ষা: বিবেকানন্দ কর্মযোগের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, শ্রমের মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন করাই হলো সর্বোত্তম পদ্ধতি। তাঁর মতে, হাতেকলমে শেখা জ্ঞান স্থায়ী হয়। তিনি শিক্ষার্থীদের পরিশ্রমী হতে এবং বাস্তব জীবনে জ্ঞান প্রয়োগ করতে উৎসাহিত করতেন।

১০. জাতীয় শিক্ষানীতির প্রভাব: বিবেকানন্দের শিক্ষাচিন্তা ভারতীয় জাতীয় শিক্ষানীতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে পরবর্তীতে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, যেমন রামকৃষ্ণ মিশন। তাঁর চিন্তাধারা আজও শিক্ষাবিদদের জন্য পথপ্রদর্শক।

উপসংহার:

স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষাচিন্তা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। তাঁর দর্শন শুধুমাত্র জ্ঞানার্জন নয়, বরং সমগ্র মানবতার উন্নয়নের কথা বলে। চরিত্র গঠন, আত্মনির্ভরশীলতা, মানবসেবা এবং বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয়—এই সবকিছুই তাঁর শিক্ষাদর্শনের মূল বিষয়। বিবেকানন্দের মতে, প্রকৃত শিক্ষা হলো সেই শিক্ষা যা মানুষকে আলোকিত করে, সমাজের কল্যাণে নিয়োজিত করে এবং ঈশ্বরের সত্যিকারের সন্ধান দেয়। তাঁর শিক্ষাচিন্তা কেবল ভারতের জন্যই নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য এক অমূল্য দার্শনিক

UNIT-3 সৈয়দ আহমদ খান ও মুহাম্মদ ইকবাল

*****3) প্রশ্ন. ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে ইকবালের ধারণার উপর একটি সংক্ষিপ্ত টাকা লেখ।৫

ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে ইকবালের ধারণা: আধুনিক বিশ্বে ধর্মনিরপেক্ষতা একটি বহুল আলোচিত এবং বিতর্কিত বিষয়। এটি ধর্ম এবং রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। ইসলামী দার্শনিক ও কবি আল্লামা ইকবাল, যিনি তাঁর কাব্য ও দার্শনিক চিন্তাধারার জন্য বিখ্যাত, এই বিষয়ে একটি স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন। ইকবালের দৃষ্টিভঙ্গি ঐতিহ্যগত ইসলামি শিক্ষা ও আধুনিক চিন্তার মধ্যে সমন্বয়ের একটি চমৎকার উদাহরণ। এই প্রবন্ধে, ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে ইকবালের ধারণা এবং তার প্রাসঙ্গিকতা বিশ্লেষণ করা হবে।

ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা ও মূল ধারণা: ধর্মনিরপেক্ষতা মূলত একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক নীতি যা রাষ্ট্র এবং ধর্মকে আলাদা করে। এটি ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিবর্তে যুক্তি ও বাস্তবতার উপর গুরুত্বারোপ করে। এই নীতির মূল ভিত্তি হলো ব্যক্তিগত ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য প্রতিরোধ করা। পশ্চিমা দার্শনিক চিন্তায় ধর্মনিরপেক্ষতা উন্নয়নশীল সমাজের এক ধাপ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

ইকবালের দৃষ্টিভঙ্গি: ইকবাল ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে একমত ছিলেন না, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন যে ধর্ম মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং এটি রাষ্ট্র এবং সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে। তাঁর মতে, ধর্মের মূল লক্ষ্য কেবল আধ্যাত্মিক উন্নয়ন নয় বরং সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও মানুষের জন্য একটি আদর্শ প্রদান করা।

ইসলাম এবং ধর্মনিরপেক্ষতা: ইকবাল মনে করতেন, ইসলাম কেবল একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। ইসলাম ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সমান গুরুত্বারোপ করে। তিনি বলেছিলেন, "ইসলামের মূল চেতনা হলো ঐক্য এবং একত্ববাদ।" এই চেতনার উপর ভিত্তি করে ইকবাল ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। তাঁর মতে, ধর্ম এবং রাষ্ট্রকে পৃথক করা ইসলামের মৌলিক ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ইকবালের সমালোচনা: ইকবাল পশ্চিমা ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণার প্রতি কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে এই ধারণাটি পশ্চিমা সমাজে ধর্মের অবক্ষয়ের ফল। ইকবালের মতে, ধর্মনিরপেক্ষতার ফলে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, "যে সমাজ ধর্মকে তার মূল ভিত্তি থেকে সরিয়ে ফেলে, সেই সমাজ ধ্বংসের পথে অগ্রসর হয়।"

মুসলিম বিশ্বের জন্য ইকবালের প্রস্তাব: ইকবাল মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি বিকল্প ধারণা উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, ইসলামী দর্শন এবং আধুনিক বিজ্ঞানের মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমন্বয় প্রয়োজন। তাঁর মতে, মুসলিম সমাজের উন্নতির জন্য ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে ইসলামী চেতনার উপর ভিত্তি করে রাষ্ট্র পরিচালনা করা উচিত।

ইকবালের দৃষ্টিভঙ্গির প্রাসঙ্গিকতা: বর্তমান যুগে ইকবালের চিন্তাধারা নতুন করে মূল্যায়ন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতা বিভিন্ন সমাজে বিভিন্নভাবে প্রয়োগ করা হয়, এবং মুসলিম বিশ্বের জন্য ইকবালের দৃষ্টিভঙ্গি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হতে পারে। ইকবালের চিন্তা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ধর্ম এবং আধুনিকতা একে অপরের পরিপূরক হতে পারে, পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়।

উপসংহার: ইকবালের ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে ধারণা একটি গভীর চিন্তার ফল। তিনি বিশ্বাস করতেন যে ধর্ম মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এটি কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রেও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ইকবালের দৃষ্টিভঙ্গি ইসলামের মৌলিক চেতনার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল এবং তিনি পশ্চিমা ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণার বিরুদ্ধে যুক্তি প্রদান করেছিলেন। তার চিন্তাধারা আজও প্রাসঙ্গিক এবং এটি মুসলিম সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

ইউনিট ৭: পণ্ডিতা রমাবাই

*****4) প্রশ্ন. পণ্ডিতা রমাবাই-এর সামাজিক ন্যায়বিচারের মূল ধারণাটি ব্যাখ্যা কর। (১০ নম্বর) অথবা, সামাজিক ন্যায় সম্পর্কে রমাবাঈয়ের ধারণার সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা কর।৫

ভূমিকা: উনিশ শতকের ভারতবর্ষ ছিল সামাজিক, ধর্মীয় ও লিঙ্গ বৈষম্যে পরিপূর্ণ এক সমাজ। এই কঠিন বাস্তবতার মধ্যে দাঁড়িয়ে যাঁরা সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন পণ্ডিতা রমাবাই। তিনি ছিলেন একজন সমাজসংস্কারক, শিক্ষাবিদ, নারীবাদী চিন্তাবিদ এবং খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত মানবতাবাদী। নারীর শিক্ষা, স্বাবলম্বন ও অধিকার নিয়ে যাঁর চিন্তা ও কাজ আজও ভারতীয় সমাজের কাছে আদর্শ হয়ে রয়েছে। তাঁর সামাজিক ন্যায়বিচার বিষয়ক ভাবনা মূলত নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তিনি মনে করতেন, ন্যায়বিচার কেবলমাত্র আইনগত দিক দিয়ে নয়, এটি একটি মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধ—যার মাধ্যমে সমাজে প্রতিটি মানুষকে সমান মর্যাদা, সুযোগ এবং সম্মান দেওয়া উচিত।

ভূমিকা: উনিশ শতকের ভারতবর্ষ ছিল সামাজিক, ধর্মীয় ও লিঙ্গ বৈষম্যে পরিপূর্ণ এক সমাজ। এই কঠিন বাস্তবতার মধ্যে দাঁড়িয়ে যাঁরা সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন পণ্ডিতা রমাবাই। তিনি ছিলেন একজন সমাজসংস্কারক, শিক্ষাবিদ, নারীবাদী চিন্তাবিদ এবং খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত মানবতাবাদী। নারীর শিক্ষা, স্বাবলম্বন ও অধিকার নিয়ে যাঁর চিন্তা ও কাজ আজও ভারতীয় সমাজের কাছে আদর্শ হয়ে রয়েছে। তাঁর সামাজিক ন্যায়বিচার বিষয়ক ভাবনা মূলত নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তিনি মনে করতেন, ন্যায়বিচার কেবলমাত্র আইনগত দিক দিয়ে নয়, এটি একটি মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধ—যার মাধ্যমে সমাজে প্রতিটি মানুষকে সমান মর্যাদা, সুযোগ এবং সম্মান দেওয়া উচিত।

রমাবাই-এর সামাজিক ন্যায়বিচারের মূল ধারণা:

পণ্ডিতা রমাবাই-এর সামাজিক ন্যায়বিচার সংক্রান্ত চিন্তাধারাগুলি মূলত পাঁচটি মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। নিচে সেই বিষয়গুলি বিশ্লেষণ করা হলো:

১. নারীর প্রতি ন্যায়বিচার: রমাবাই-এর মতে, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় যদি নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন না ঘটে। তিনি দেখেছিলেন যে, হিন্দু সমাজে নারীদের অবস্থান অত্যন্ত দুর্বল। বাল্যবিবাহ, বিধবা অবস্থায় সামাজিক নিপীড়ন, শিক্ষার অভাব ইত্যাদি নারীদের জীবনে দুর্দশার কারণ ছিল। তিনি নারীদের জন্য শিক্ষার দ্বার উন্মোচন করে দিতে চেয়েছিলেন, কারণ তাঁর মতে, শিক্ষা হল আত্মমর্যাদা ও অধিকারচেতনার মূল চাবিকাঠি।

রমাবাই "শারদাসদন" নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, যেখানে বিধবা এবং অনাথ নারীদের শিক্ষিত করে তোলা হতো। এটি ছিল তাঁর সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রকৃত প্রয়োগ।

২. ধর্মনিরপেক্ষতা ও ব্যক্তিস্বাধীনতা: যদিও রমাবাই পরবর্তীকালে খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন, তবুও তিনি কখনোই জোর করে ধর্ম পরিবর্তনের পক্ষে ছিলেন না। তাঁর চিন্তাধারায় ধর্ম একটি ব্যক্তিগত বিষয় ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, প্রত্যেক মানুষেরই স্বাধীনভাবে বিশ্বাস এবং মত প্রকাশের অধিকার থাকা উচিত। কোনো ব্যক্তিকে তাঁর ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করা উচিত নয়। এই চিন্তা থেকেই তিনি সমাজে ধর্মনিরপেক্ষতার গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন।

৩. শিক্ষার মাধ্যমে সামাজিক upliftment: রমাবাই নারীর জন্য সর্বজনীন ও কর্মমুখী শিক্ষার পক্ষে ছিলেন। তিনি মনে করতেন, যদি নারীরা শিক্ষার আলো না পায় তবে তারা কখনোই আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে পারবে না। তাই তিনি নারীদের জন্য পাঠ্যক্রম নির্মাণে প্রাচীন ধর্মীয় সংস্কারমূলক শিক্ষা বাদ দিয়ে আধুনিক বিজ্ঞান, ইতিহাস, চিকিৎসা, নার্সিং, শিক্ষকতা ইত্যাদি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, সামাজিক ন্যায়বিচার কেবলমাত্র দান বা সহানুভূতির বিষয় নয়—এটি হচ্ছে ক্ষমতায়নের প্রশ্ন। শিক্ষা সেই ক্ষমতায়নের প্রথম ধাপ।

৪. জাতপাত ও শ্রেণিবৈষম্যের বিরুদ্ধে অবস্থান: রমাবাই সমাজের জাতিভেদ প্রথার কঠোর সমালোচক ছিলেন। তিনি মনে করতেন, জাতপাতের ভিত্তিতে মানুষকে ছোট করা, তাদের সামাজিকভাবে নিচু স্থানে রাখা এক ধরণের ‘সামাজিক অপরাধ’। তাঁর মতে, জাতপাতের ভিত্তিতে সমাজকে ভাগ করা মানে এক ধরণের 'institutional injustice' তৈরি করা। তিনি বিধবাদের জন্য তৈরি তাঁর শিক্ষাকেন্দ্রে কোনো জাতি বা শ্রেণিভেদ করেননি। ব্রাহ্মণ, শূদ্র, দলিত, মুসলিম—সব নারীদের জন্য তিনি তাঁর দরজা খুলে রেখেছিলেন।

৫. নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠা: রমাবাই সামাজিক ন্যায়বিচারকে কেবল আইন ও বিধানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি এটিকে একটি মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে দেখেছিলেন। একজন মানুষের প্রতি অন্য একজন মানুষের দায়িত্ববোধ, সহানুভূতি, মমতা ও সহানুভূতিশীল আচরণ—এসবকেই তিনি সামাজিক ন্যায়বিচারের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মনে করতেন।

রমাবাই-এর চিন্তার আধুনিক প্রাসঙ্গিকতা: রমাবাই-এর চিন্তাভাবনা কেবল তাঁর সময়েই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তা আজও প্রাসঙ্গিক। আধুনিক ভারতে নারীর প্রতি সহিংসতা, শিক্ষায় বৈষম্য, কর্মসংস্থানে লিঙ্গভিত্তিক পার্থক্য, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও জাতিগত বৈষম্য এখনও এক বাস্তব চিত্র। এই পরিস্থিতিতে রমাবাই-এর সামাজিক ন্যায়বিচারের ধারণা আমাদের সামনে একটি বিকল্প পথ দেখায়। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন যে, ন্যায়বিচার মানে কেবল আদালতে রায় পাওয়া নয়—এটি একটি সামাজিক মানসিকতার পরিবর্তন, যা আমাদের একে অপরকে সমান চোখে দেখতে শেখায়।

সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ: রমাবাই-এর চিন্তায় কিছু দুর্বলতা বা সীমাবদ্ধতাও ছিল। অনেকে মনে করেন, তাঁর খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষা গ্রহণ তাঁর সামাজিক সংস্কারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল, কারণ এতে অনেক হিন্দু রক্ষণশীল সমাজ তাঁর বিরোধিতা করে। তবে তাঁর কাজ এবং ভাবনায় যে আন্তরিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ ছিল, তা সময়ের সীমা ছাড়িয়ে এক সর্বজনীন তাৎপর্য বহন করে।

রমাবাই ছিলেন ব্যতিক্রমী নারী। তিনি পিতৃতান্ত্রিক সমাজের গায়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন। শিক্ষার গুরুত্ব বুঝেছেন এবং সমাজের উপেক্ষিত অংশের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তাঁর জীবন আমাদের বলে—ন্যায়বিচার কেবল তত্ত্বগত নয়, এটি বাস্তব জীবনের প্রয়োগে নিহিত।

উপসংহার: পণ্ডিতা রমাবাই-এর সামাজিক ন্যায়বিচারের ধারণা ছিল বিস্তৃত, মানবিক ও সময়োত্তীর্ণ। তিনি ছিলেন এক অগ্রণী নারী, যিনি সমাজের প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর ন্যায়বিচারের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সমতার, মর্যাদার এবং মানবিকতার উপর ভিত্তি করে গঠিত। বর্তমান যুগে যখন সমাজে ধর্ম, লিঙ্গ ও জাতির ভিত্তিতে ভেদাভেদ বাড়ছে, তখন রমাবাই-এর চিন্তা আমাদের সামনে এক আশার আলো দেখায়।

তাঁর কাজ ও দর্শন প্রমাণ করে যে, একক একজন নারীরও সমাজ পরিবর্তনের শক্তি থাকতে পারে, যদি সেই শক্তি হয় মানবতাবাদী, ন্যায়নিষ্ঠ এবং অন্তরের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ।

সাজেশন পিডিএফ Copy টি কেমন দেখতে হবে দেখে নাও

Kalyani University B.A 4th Semester Political Science Major NEP 1st Paper ছোট প্রশ্ন, বড়ো প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন PDF টি পেতে.. আপনি 150 টাকা পেমেন্ট করুন। পেমেন্টের পর এক সেকেন্ডের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত সাজেশনটি পাবেন। ধন্যবাদ। টাকা টি পেমেন্ট করার জন্য নিচে PAY বাটনে ক্লিক করুন।

অথবা আপনি চাইলে সরাসরি PhonePe-এর মাধ্যমে 150 টাকা পেমেন্ট করে সাজেশন সংগ্রহ করতে পারেন। PhonePe নম্বর: 6295668424 (পেমেন্টের পর স্ক্রিনশট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠালে PDF COPY পাঠিয়ে দেব।)

ফোর সেমিস্টারের সমস্ত সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক কর ।