
Kalyani University Suggestion
Kalyani University B.A 2nd Semester Education Minor Nep Suggestions 2025
Educational Sociology (শিক্ষাগত সমাজবিজ্ঞান)
Kalyani University B.A 2nd Semester Education Minor Nep ছোট প্রশ্ন, বড়ো প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন PDF টি পেতে.. আপনি 99 টাকা পেমেন্ট করুন। পেমেন্টের পর এক সেকেন্ডের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত সাজেশনটি পাবেন। ধন্যবাদ। টাকা টি পেমেন্ট করার জন্য নিচে PAY বাটনে ক্লিক করুন।
অথবা আপনি চাইলে সরাসরি PhonePe-এর মাধ্যমে 99 টাকা পেমেন্ট করে সাজেশন সংগ্রহ করতে পারেন। PhonePe নম্বর: 6295668424 (পেমেন্টের পর স্ক্রিনশট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠালে PDF COPY পাঠিয়ে দেব।)
My Phone Number- 6295668424
• এই সাজেশনের বড়ো প্রশ্ন সংখ্যা 28 টি।
ছোট প্রশ্ন প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন পাবেন।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজেশনেরর বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজেশনের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট
অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.
এখানে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।
(সিলেবাস – ২০২৫)
ইউনিট I: সমাজবিজ্ঞান এবং শিক্ষামূলক সমাজবিজ্ঞান
ক) সমাজবিজ্ঞান: অর্থ, উৎস, প্রকৃতি এবং পরিধি
খ) শিক্ষামূলক সমাজবিজ্ঞান: অর্থ, প্রকৃতি, পরিধি এবং গুরুত্ব
গ) শিক্ষা ও সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক
ইউনিট II: সামাজিক কারণ, সমস্যা এবং শিক্ষা
ক) সংস্কৃতি: ধারণা, প্রকৃতি এবং উপাদান; সংস্কৃতি ও সমাজের মধ্যে সম্পর্ক; সংস্কৃতিতে শিক্ষার ভূমিকা
খ) সাংস্কৃতিক ব্যবধান: ধারণা, বৈশিষ্ট্য, কারণ; শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক ব্যবধান
গ) সামাজিক সমস্যা:
• বেকারত্ব: ধারণা, ধরন, কারণ; বেকারত্ব দূরীকরণে শিক্ষার ভূমিকা
• অসমতা: ধারণা, কারণ; বৈষম্য দূরীকরণে শিক্ষার ভূমিকা
ইউনিট III: সামাজিক গোষ্ঠী এবং শিক্ষা
ক) সামাজিক গোষ্ঠী: অর্থ এবং প্রকৃতি
খ) সামাজিক গোষ্ঠীর ধরন:
• প্রাথমিক গোষ্ঠী: অর্থ, বৈশিষ্ট্য এবং ভূমিকা
• মাধ্যমিক বা গৌণ গোষ্ঠী: অর্থ, বৈশিষ্ট্য এবং ভূমিকা
• প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বা গৌণ গোষ্ঠীর মধ্যে তুলনা
গ) সামাজিকীকরণ: অর্থ, বৈশিষ্ট্য; সামাজিকীকরণের কারণ; বিদ্যালয়ের ভূমিকা
ঘ) সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা সংস্থা:
1. পরিবার
2. বিদ্যালয়
3. রাষ্ট্র
4. গণমাধ্যম
5. ধর্ম
ইউনিট IV: সামাজিক পরিবর্তন এবং শিক্ষা
ক) সামাজিক পরিবর্তন: সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, কারণ, সীমাবদ্ধতা; শিক্ষা ক্ষেত্রে সামাজিক পরিবর্তনের ভূমিকা
খ) ভারতে সামাজিক পরিবর্তন:
• বেসরকারীকরণ: ধারণা এবং শিক্ষার সাথে সম্পর্ক
• বিশ্বায়ন: ধারণা এবং শিক্ষার সাথে সম্পর্ক
গ) সামাজিক স্তরবিন্যাস: সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, কারণ; শিক্ষা এবং সামাজিক স্তরবিন্যাস
ঘ) সামাজিক গতিশীলতা: সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, কারণ; শিক্ষা এবং সামাজিক গতিশীলতা
Unit-1: সমাজবিজ্ঞান এবং শিক্ষামূলক সমাজবিজ্ঞান
*****1) প্রশ্ন. সমাজ বিজ্ঞান কাকে বলে? সমাজ বিজ্ঞানের ক্ষেত্র বা পরিধি সম্পর্কে আলোচনা কর। (৫/১০)
সমাজ বিজ্ঞান কাকে বলে?
সমাজ বিজ্ঞান (Sociology) হল সমাজ, সামাজিক আচরণ, প্রতিষ্ঠান এবং মানব মিথস্ক্রিয়ার বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন। এটি মানব সমাজের গঠন, পরিবর্তন এবং বিকাশের মূল বিষয়গুলিকে বোঝার জন্য গবেষণা করে। সমাজ বিজ্ঞান বিভিন্ন পদ্ধতি ও তত্ত্বের মাধ্যমে মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং সামাজিক কাঠামোগুলি বিশ্লেষণ করে। এটি একটি বহুমাত্রিক বিষয়, যা সমাজের বিভিন্ন দিক, যেমন সংস্কৃতি, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, পরিবার, সামাজিক শ্রেণি এবং আচরণগত নিদর্শন ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করে।
সমাজ বিজ্ঞান মূলত মানুষের জীবনযাত্রা, সমাজের পরিবর্তন এবং এর গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করে। ১৮৩৮ সালে অগাস্ট কোম্ত "Sociology" শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। তিনি সমাজকে একটি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেন এবং সমাজ বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেন।
সমাজ বিজ্ঞানের ক্ষেত্র বা পরিধি:
সমাজ বিজ্ঞান একটি বিস্তৃত ক্ষেত্র, যা বিভিন্ন উপবিভাগ এবং গবেষণা ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে প্রধান কিছু ক্ষেত্র নিম্নে আলোচনা করা হলো:
১. সামাজিক কাঠামো ও প্রতিষ্ঠান:
সমাজ বিজ্ঞানের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র হল সামাজিক কাঠামো ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে গবেষণা। প্রতিটি সমাজে কিছু নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থাকে, যেমন পরিবার, শিক্ষা ব্যবস্থা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক সংগঠন এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। এই প্রতিষ্ঠানগুলি কিভাবে গঠিত হয় এবং কীভাবে কাজ করে তা সমাজ বিজ্ঞানীরা বিশ্লেষণ করেন।
২. সামাজিক সম্পর্ক ও সামাজিক পরিবর্তন:
সমাজ বিজ্ঞানীরা মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং সামাজিক পরিবর্তনের কারণ ও প্রভাব বিশ্লেষণ করেন। সমাজের পরিবর্তন কিভাবে ঘটে এবং কীভাবে এটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে তা গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশ, নগরায়ণ, বিশ্বায়ন, এবং সংস্কৃতির পরিবর্তন সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে পড়ে।
৩. সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস ও বৈষম্য:
সমাজে ধনী ও দরিদ্র, শিক্ষিত ও অশিক্ষিত, বিভিন্ন পেশার মানুষদের মধ্যে পার্থক্য থাকে। সমাজ বিজ্ঞানীরা এসব শ্রেণিবিন্যাস ও বৈষম্যের কারণ ও প্রভাব বিশ্লেষণ করেন। জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ ও অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে মানুষ কীভাবে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত হয় এবং তা সমাজে কী ধরনের প্রভাব ফেলে তা সমাজ বিজ্ঞানীরা বোঝার চেষ্টা করেন।
৪. পরিবার ও বিবাহ:
পরিবার সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। সমাজ বিজ্ঞানীরা পরিবার কাঠামো, বিবাহ প্রথা, পারিবারিক সম্পর্ক, সন্তান লালন-পালন ও পরিবারের সামাজিক ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করেন। সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে পারিবারিক কাঠামোরও পরিবর্তন ঘটে, যা সমাজ বিজ্ঞানীদের গবেষণার একটি প্রধান ক্ষেত্র।
৫. সংস্কৃতি ও সামাজিকীকরণ:
সংস্কৃতি হল মানুষের জীবনযাত্রার মূল ভিত্তি। ভাষা, ধর্ম, কৃষ্টি, রীতিনীতি, মূল্যবোধ, শিল্প, সাহিত্য ইত্যাদি সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। সমাজ বিজ্ঞানীরা সংস্কৃতির বিকাশ ও পরিবর্তন, এর সামাজিক প্রভাব এবং বিভিন্ন সমাজে সংস্কৃতির পার্থক্য নিয়ে গবেষণা করেন। সামাজিকীকরণ হল সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যক্তি তার সমাজের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ রপ্ত করে।
৬. শিক্ষা ও সমাজ:
শিক্ষা সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এটি ব্যক্তি ও সমাজের উন্নতির জন্য অপরিহার্য। সমাজ বিজ্ঞানীরা শিক্ষা ব্যবস্থার গঠন, কার্যকারিতা, শিক্ষার মাধ্যমে সামাজিক পরিবর্তন এবং শিক্ষার বৈষম্য নিয়ে গবেষণা করেন।
৭. অর্থনীতি ও সমাজ:
অর্থনীতি এবং সমাজ একে অপরের সাথে জড়িত। সমাজ বিজ্ঞানীরা অর্থনৈতিক কাঠামো, পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, শ্রমবাজার, উৎপাদন, বিতরণ ও ভোগের সামাজিক প্রভাব বিশ্লেষণ করেন। অর্থনৈতিক পরিবর্তন কীভাবে সমাজকে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে সামাজিক নীতিগুলো অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলে তা সমাজ বিজ্ঞানীদের গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
৮. রাজনীতি ও সমাজ:
রাজনীতি সমাজ বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। সমাজ বিজ্ঞানীরা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, সরকার, ক্ষমতা কাঠামো, নীতি নির্ধারণ প্রক্রিয়া, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক আচরণ নিয়ে গবেষণা করেন। সমাজে ক্ষমতার বণ্টন কীভাবে হয় এবং এটি কীভাবে জনগণের উপর প্রভাব ফেলে তা সমাজ বিজ্ঞানীরা বিশ্লেষণ করেন।
৯. অপরাধ ও সমাজ:
সমাজ বিজ্ঞানের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল অপরাধ ও বিচ্যুতি। সমাজ বিজ্ঞানীরা অপরাধের কারণ, অপরাধ প্রবণতা, সামাজিক নিয়ন্ত্রণ, আইনি ব্যবস্থা এবং সংশোধনমূলক কার্যক্রম নিয়ে গবেষণা করেন। অপরাধ দমনে আইন ও সামাজিক নীতিগুলোর ভূমিকা কী তা বিশ্লেষণ করা হয়।
১০. নগর ও গ্রামীণ সমাজ:
সমাজ বিজ্ঞানীরা নগর ও গ্রামীণ সমাজের গঠন, জীবনযাত্রার পার্থক্য, নগরায়ণ, শিল্পায়ন এবং নগর সমস্যাগুলি বিশ্লেষণ করেন। গ্রাম ও শহরের জীবনধারার মধ্যে কী কী পার্থক্য রয়েছে এবং কীভাবে আধুনিক নগরসমাজ গঠিত হচ্ছে তা সমাজ বিজ্ঞানীরা বোঝার চেষ্টা করেন।
উপসংহার:
সমাজ বিজ্ঞান একটি ব্যাপক ও গুরুত্বপূর্ণ শাস্ত্র, যা সমাজের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে। এটি মানুষের আচরণ, সামাজিক পরিবর্তন, প্রতিষ্ঠান, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির উপর আলোকপাত করে। সমাজ বিজ্ঞান সমাজের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে এবং তার সমাধানের পথ নির্দেশ করে। এটি আমাদের সমাজকে গভীরভাবে বুঝতে এবং উন্নত করতে সাহায্য করে।
Unit-2: সামাজিক কারণ, সমস্যা এবং শিক্ষা
*****2) প্রশ্ন. সংস্কৃতি কী? সংস্কৃতির প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ। শিক্ষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক আলোচনা কর। (৫+৫=১০)
সংস্কৃতি কী:
সংস্কৃতি হল একটি সমাজের মানুষের জীবনধারা, চিন্তাধারা, আচার-অনুষ্ঠান, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, নৈতিকতা, শিল্প, সাহিত্য, ধর্ম এবং প্রথার সমষ্টি। এটি একটি জাতির পরিচয় বহন করে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হয়। সংস্কৃতি কেবলমাত্র বাহ্যিক আচরণ বা রীতিনীতি নয়, এটি মানুষের অন্তর্নিহিত জ্ঞান ও বিশ্বাসের প্রতিফলন। সংস্কৃতি সামাজিক এবং ঐতিহাসিক বিকাশের ফল, যা একটি জনগোষ্ঠীর মানসিকতা ও জীবনযাত্রার ধরনকে প্রতিফলিত করে।
সংস্কৃতির প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যগুলি:
১. অর্জিত গুণ: সংস্কৃতি জন্মগত নয়; এটি অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত হয়। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও পরিবেশ থেকে মানুষ সংস্কৃতি গ্রহণ করে।
২. প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তর সংক্রমিত: সংস্কৃতি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে প্রবাহিত হয়। এটি মৌখিক, লিখিত বা ব্যবহারিক শিক্ষার মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়।
৩. গতিশীলতা: সংস্কৃতি একটি স্থির বিষয় নয়; এটি পরিবর্তনশীল। নতুন প্রযুক্তি, সামাজিক পরিবর্তন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে সংস্কৃতির ধরণ পরিবর্তিত হয়।
৪. সামাজিক রীতিনীতির প্রতিফলন: সংস্কৃতি সমাজের মূল্যবোধ ও রীতিনীতির উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর ধর্ম, আইন, আচরণ এবং আচার-অনুষ্ঠান সংস্কৃতির মূল অংশ।
৫. বৈচিত্র্যময়: প্রতিটি সমাজের সংস্কৃতি ভিন্ন। অঞ্চলভেদে সংস্কৃতির পার্থক্য দেখা যায়, যা মানুষের জীবনধারার বৈচিত্র্য সৃষ্টি করে।
৬. প্রভাবশালী: সংস্কৃতি ব্যক্তির জীবনযাত্রা, চিন্তা-চেতনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলে। এটি মানুষের নৈতিকতা ও মূল্যবোধের ভিত্তি গঠন করে।
৭. অদৃশ্য কিন্তু কার্যকর: সংস্কৃতি সাধারণত অদৃশ্য হলেও এটি মানুষের চিন্তা ও আচরণের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে।
৮. অভ্যাস ও আচার-অনুষ্ঠানের সংকলন: প্রতিটি সংস্কৃতি কিছু নির্দিষ্ট আচার-অনুষ্ঠান ও অভ্যাসের মাধ্যমে প্রকাশ পায়, যা সমাজের মানুষ মেনে চলে।
শিক্ষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক:
শিক্ষা ও সংস্কৃতি একে অপরের পরিপূরক। শিক্ষা সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে এবং সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১. সংস্কৃতি সংরক্ষণে শিক্ষা: শিক্ষা পূর্ববর্তী প্রজন্মের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়। এটি সংস্কৃতির স্থায়িত্ব ও বিকাশ নিশ্চিত করে।
২. সংস্কৃতির বিকাশ: শিক্ষা সংস্কৃতির উন্নয়নে সহায়তা করে। নতুন নতুন জ্ঞান ও প্রযুক্তির সংযোজনের মাধ্যমে সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হয়।
৩. নৈতিক মূল্যবোধ ও আচরণ গঠনে ভূমিকা: শিক্ষা মানুষের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সামাজিক আচরণ ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তৈরি করে।
৪. সামাজিক পরিবর্তনে অবদান: শিক্ষা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করে এবং সংস্কৃতির গতিশীলতা নিশ্চিত করে। নতুন ভাবনা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটে।
৫. ভিন্ন সংস্কৃতির সাথে মেলবন্ধন: শিক্ষা মানুষকে বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন করে এবং আন্তঃসাংস্কৃতিক বোঝাপড়ার উন্নতি ঘটায়। এটি গ্লোবালাইজেশনের যুগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৬. ব্যক্তি ও সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা: শিক্ষা ব্যক্তি ও সমাজকে সুসংগঠিত জীবনযাপনের জন্য প্রস্তুত করে। এটি মানুষের সৃজনশীলতা ও মানসিক বিকাশের সহায়ক।
৭. অসাম্প্রদায়িকতা ও সহনশীলতা বৃদ্ধি: শিক্ষা মানুষের মধ্যে সহনশীলতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির মনোভাব গড়ে তোলে, যা সুস্থ সাংস্কৃতিক পরিবেশ তৈরি করে।
উপসংহার: সংস্কৃতি মানুষের জীবনযাত্রার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শিক্ষা সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে এবং সংস্কৃতির সংরক্ষণ, বিকাশ ও পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সমাজের অগ্রগতি ও মানব সভ্যতার বিকাশে সহায়তা করে। তাই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সংস্কৃতির ইতিবাচক দিকগুলো সংরক্ষণ করা এবং ক্ষতিকর দিকগুলো দূর করা সম্ভব।
Unit-3: সামাজিক গোষ্ঠী এবং শিক্ষা
*****2) প্রশ্ন. প্রাথমিক গোষ্ঠী কাকে বলে? প্রাথমিক গোষ্ঠীর শিক্ষামূলক তাৎপর্য বা বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ। (৫/১০)
ভূমিকা: সমাজবিজ্ঞান ও শিক্ষাবিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মানুষের সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া এবং এই প্রক্রিয়ার প্রধান মাধ্যম হলো গোষ্ঠী। একটি গোষ্ঠীর মধ্যে বসবাস করে মানুষ তার চিন্তা-চেতনা, আচার-আচরণ, মূল্যবোধ এবং সামাজিক দক্ষতা অর্জন করে। গোষ্ঠী প্রধানত দুই প্রকার— প্রাথমিক গোষ্ঠী এবং গৌণ গোষ্ঠী। এর মধ্যে প্রাথমিক গোষ্ঠী (Primary Group) হলো সেই গোষ্ঠী যা মানুষের জীবনের প্রথম ধাপে আত্মিক সম্পর্ক, ঘনিষ্ঠতা এবং ভালোবাসার ভিত্তিতে গঠিত হয়। এই প্রাথমিক গোষ্ঠী মানুষের শিক্ষাগত, মানসিক ও সামাজিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
🔶 প্রাথমিক গোষ্ঠী কাকে বলে?: সমাজবিজ্ঞানী চার্লস হর্টন কুলি (Charles Horton Cooley) প্রথম ‘প্রাথমিক গোষ্ঠী’ (Primary Group) শব্দটি ব্যবহার করেন তার “Social Organization” (1909) গ্রন্থে। তিনি এই গোষ্ঠীকে বর্ণনা করেন এমন একটি ঘনিষ্ঠ, ছোট, আত্মিক সম্পর্কযুক্ত গোষ্ঠী হিসেবে যেখানে ব্যক্তি মুখোমুখি সম্পর্কের মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা, ভালোবাসা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে যুক্ত থাকে।
🔹 সংজ্ঞা:
কুলির সংজ্ঞা অনুযায়ী:
“Primary group is a small group characterized by intimate, face-to-face association and cooperation.”
অর্থাৎ, প্রাথমিক গোষ্ঠী এমন একটি ছোট ও ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠী, যেখানে সদস্যদের মধ্যে মুখোমুখি যোগাযোগ, আন্তরিকতা এবং সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে।
🔶 প্রাথমিক গোষ্ঠীর প্রধান উদাহরণ:
• পরিবার (Family)
• বন্ধু (Friends)
• প্রতিবেশী (Neighbours)
• ছোট সামাজিক সংঘ বা খেলার দল
প্রাথমিক গোষ্ঠীর শিক্ষামূলক তাৎপর্য বা বৈশিষ্ট্য: প্রাথমিক গোষ্ঠী শুধু সামাজিক বন্ধনই সৃষ্টি করে না, এটি শিক্ষামূলক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিম্নে প্রাথমিক গোষ্ঠীর শিক্ষামূলক তাৎপর্য বা বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করা হলো:
১. নৈতিক শিক্ষার ভিত্তি: প্রাথমিক গোষ্ঠী ব্যক্তির প্রাথমিক নৈতিক শিক্ষার প্রধান উৎস। পরিবার থেকে শিশুরা ভালো-মন্দ, সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। এটি তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে নৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
২. ব্যক্তিত্ব গঠনের সহায়ক: প্রাথমিক গোষ্ঠী ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিশুর চারিত্রিক গঠন, মূল্যবোধ, মনোভাব এবং আচার-ব্যবহারের বিকাশ প্রধানত পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের মাধ্যমে ঘটে।
৩. ভাষা ও সামাজিক দক্ষতার বিকাশ: শিশুর ভাষা শেখার প্রথম ক্ষেত্র তার পরিবার। পরিবার এবং প্রাথমিক বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে সে ভাষার জ্ঞান লাভ করে এবং সামাজিক দক্ষতা অর্জন করে।
৪. সামাজিকীকরণের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম: প্রাথমিক গোষ্ঠী সামাজিকীকরণের (Socialization) প্রথম ধাপ। এটি ব্যক্তিকে সামাজিক রীতিনীতি, মূল্যবোধ, সংস্কৃতি ও আচরণবিধি সম্পর্কে শিক্ষা দেয়।
৫. আবেগিক স্থিতিশীলতা প্রদান: প্রাথমিক গোষ্ঠী আবেগিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি সদস্যদের মানসিক সমর্থন প্রদান করে এবং দুঃসময়ে সহযোগিতা করে। ফলে আত্মবিশ্বাস ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৬. সহযোগিতা ও নেতৃত্বের গুণাবলি সৃষ্টি: পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশ ঘটে। শিশুদের মধ্যে নেতৃত্বদানের ক্ষমতা, দলগত কাজে অংশগ্রহণ এবং পারস্পরিক সহমর্মিতার মানসিকতা গড়ে ওঠে।
৭. নৈতিক ও মূল্যবোধের শিক্ষা: প্রাথমিক গোষ্ঠীর মাধ্যমে শিশুরা সামাজিক মূল্যবোধ, সততা, পরোপকারিতা, দায়িত্ববোধ এবং সহনশীলতা ইত্যাদি গুণ অর্জন করে, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে সঠিক পথ অনুসরণে সাহায্য করে।
৮. সৃজনশীলতা ও আত্মনির্ভরশীলতার বিকাশ: পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের মধ্যে শিশুর সৃজনশীল চিন্তা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বিকাশ লাভ করে। এটি তাদের আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করে।
উপসংহার: প্রাথমিক গোষ্ঠী শুধু একটি সমাজবৈজ্ঞানিক ধারণা নয়, এটি ব্যক্তি গঠনের ভিত্তি। একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব, মূল্যবোধ, সামাজিক দক্ষতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তি তৈরি হয় এই গোষ্ঠীর মধ্য দিয়ে। বিশেষ করে পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীরা শিশুর মানসিক গঠন ও চারিত্রিক বিকাশে প্রধান ভূমিকা পালন করে। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাথমিক গোষ্ঠীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। শিক্ষক, শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষানীতি নির্ধারকদের উচিত শিক্ষার্থীর সামাজিক পটভূমি ও প্রাথমিক গোষ্ঠীর অবদানকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাক্রম গঠন ও কার্যক্রম পরিচালনা করা।
Unit-4: সামাজিক পরিবর্তন এবং শিক্ষা
*****2) প্রশ্ন. সামাজিক পরিবর্তনের কারণগুলি লেখ। (৫ নম্বর)
ভূমিকা: মানবসভ্যতা এক চলমান ও প্রগতিশীল প্রক্রিয়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাজের গঠন, রীতি-নীতি, মূল্যবোধ, আচার-ব্যবহার ও জীবনধারায় পরিবর্তন ঘটে থাকে। এই পরিবর্তনকে সমাজবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় সামাজিক পরিবর্তন। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি সমাজের অভ্যন্তরীণ গঠন ও বৈশিষ্ট্যসমূহের রূপান্তর ঘটে। সামাজিক পরিবর্তন আকস্মিক কিংবা ধীরগতিতে হতে পারে এবং এটি সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রভাব ফেলে থাকে। সামাজিক পরিবর্তন কখনো ইতিবাচক, আবার কখনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে সমাজে। সমাজ পরিবর্তনের পেছনে বহু অন্তর্নিহিত ও বহিঃস্থ কারণ কাজ করে। এই প্রবন্ধে আমরা বিস্তারিতভাবে সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান কারণগুলি আলোচনা করব।
সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান কারণসমূহ:
১. প্রাকৃতিক কারণ (Natural Factors): প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমাজে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ভূমিকম্প, বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি কারণে কোনো অঞ্চল জনবসতিহীন হয়ে পড়ে, আবার মানুষকে নতুন পরিবেশে অভ্যস্ত হতে হয়। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে কৃষিকাজ, পেশা, খাদ্যাভ্যাস, বসবাসের ধরণ ইত্যাদির পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে সমাজে নতুন চাহিদা ও কাঠামোর জন্ম হয়।
২. অর্থনৈতিক কারণ (Economic Factors): অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা মন্দা সামাজিক পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি। শিল্পায়ন, নগরায়ন, প্রযুক্তির বিকাশ, পুঁজিবাদের প্রভাব, চাকরির ক্ষেত্রের রূপান্তর ইত্যাদি কারণে সমাজে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, কৃষি নির্ভর সমাজ থেকে শিল্পনির্ভর সমাজে রূপান্তরিত হলে সমাজের পেশাভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাস ও জীবনধারা সম্পূর্ণভাবে পাল্টে যায়।
৩. প্রযুক্তিগত কারণ (Technological Factors): প্রযুক্তির অগ্রগতি সামাজিক পরিবর্তনের অন্যতম শক্তিশালী কারণ। বিশেষ করে যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, ই-কমার্স ইত্যাদি সমাজের বিভিন্ন দিককে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে। মানুষের জীবনযাত্রা, চিন্তাভাবনা, পারস্পরিক সম্পর্ক এবং কাজের ধরন পাল্টে যাচ্ছে প্রযুক্তির প্রভাবে। উদাহরণস্বরূপ, আগে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ হতো, এখন মুহূর্তে ইমেইল বা বার্তা পাঠানো যায়।
৪. রাজনৈতিক কারণ (Political Factors): রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও নীতির পরিবর্তনের ফলে সমাজে রূপান্তর ঘটে। গণতন্ত্র, সাম্যবাদ, সামরিক শাসন, উপনিবেশবাদ, স্বাধীনতা সংগ্রাম ইত্যাদি রাজনৈতিক শক্তি সমাজের কাঠামো ও চেতনাকে প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের স্বাধীনতার পর নতুন সংবিধান, আইন-কানুন ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের আবির্ভাবের মাধ্যমে সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
৫. সাংস্কৃতিক কারণ (Cultural Factors): সাংস্কৃতিক পরিবর্তনও সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। ধর্ম, রীতিনীতি, মূল্যবোধ, জীবনদর্শন ও বিশ্বাসব্যবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজে নতুন ধারা ও গঠন জন্ম নেয়। উদাহরণস্বরূপ, নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, যৌথ পরিবার থেকে একক পরিবারে রূপান্তর, পোশাকের ধরণে পরিবর্তন ইত্যাদি সামাজিক পরিবর্তনের নিদর্শন।
৬. শিক্ষা (Education): শিক্ষা একটি শক্তিশালী সামাজিক মাধ্যম যা পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ চিন্তাশীল, সচেতন ও যুক্তিবাদী হয়। শিক্ষা মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং সমাজের গঠনমূলক দিকগুলিকে গ্রহণ করতে সাহায্য করে। শিক্ষিত সমাজ নারী-পুরুষ সমতা, মানবাধিকার, পরিবেশ সচেতনতা ইত্যাদির বিষয়ে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে। ফলে শিক্ষা সামাজিক পরিবর্তনের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
৭. ধর্ম ও ধর্মীয় আন্দোলন (Religion and Religious Movements): ধর্ম এবং ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন সমাজে পরিবর্তন আনতে সক্ষম। কখনো কখনো ধর্মীয় কুসংস্কার, আচরণ, নিয়মাবলী সমাজকে রক্ষণশীল করে তোলে, আবার অনেক সময় ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা সমাজ সংস্কারে নেতৃত্ব দেন। যেমন, রাজা রামমোহন রায়ের ব্রাহ্ম সমাজ, স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শ, ইসকন আন্দোলন ইত্যাদি সমাজের মূল্যবোধ ও জীবনধারায় পরিবর্তন এনেছে।
৮. গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (Mass Media & Social Media): টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র, ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম প্রভৃতি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানুষের চিন্তা-ভাবনা ও মতাদর্শ গঠনে বড় ভূমিকা রাখছে। সামাজিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা, আন্দোলন, জনমত গঠন ইত্যাদি গণমাধ্যমের মাধ্যমে আরও তীব্র ও তাৎক্ষণিক হচ্ছে। এর ফলে সমাজে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন যেমন ঘটে, তেমনি কিছু নেতিবাচক পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যায়।
৯. আইনি সংস্কার (Legal Reforms): আইনের পরিবর্তন সমাজে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। কোনো নতুন আইন বা সংশোধন সমাজের আচরণ ও মানসিকতাকে বদলে দিতে পারে। যেমন, শিশুশ্রম নিষিদ্ধকরণ আইন, তথ্যের অধিকার আইন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ আইন ইত্যাদি সমাজকে অধিক মানবিক ও ন্যায়নিষ্ঠ করে তুলেছে।
১০. আবাসন ও পরিবেশগত পরিবর্তন (Urbanization and Environmental Changes): নগরায়নের ফলে গ্রামীণ জীবনধারায় পরিবর্তন এসেছে। মানুষ কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি দিচ্ছে। এর ফলে তাদের জীবনধারায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগছে। তবে এর বিপরীতে গ্রামীণ সংস্কৃতি ও সামাজিক বন্ধন দুর্বল হয়ে পড়ছে। এছাড়া পরিবেশ দূষণ, বন উজাড়, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি সমাজে দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন আনছে।