Kalyani University Suggestion
Kalyani University B.A 2nd Semester Political Science Minor Nep Suggestion 2025
Indian Constitution (ভারতীয়সংবিধান)
Kalyani University B.A 2nd Semester Political Science Minor Nep ছোট প্রশ্ন, বড়ো প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন PDF টি পেতে.. আপনি 99 টাকা পেমেন্ট করুন। পেমেন্টের পর এক সেকেন্ডের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত সাজেশনটি পাবেন। ধন্যবাদ। টাকা টি পেমেন্ট করার জন্য নিচে PAY বাটনে ক্লিক করুন।
অথবা আপনি চাইলে সরাসরি PhonePe-এর মাধ্যমে 99 টাকা পেমেন্ট করে সাজেশন সংগ্রহ করতে পারেন। PhonePe নম্বর: 6295668424 (পেমেন্টের পর স্ক্রিনশট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠালে PDF COPY পাঠিয়ে দেব।)
My Phone Number- 6295668424
• এই সাজেশনের বড়ো প্রশ্ন সংখ্যা 28 টি।
ছোট প্রশ্ন প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন পাবেন।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজেশনেরর বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজেশনের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট
অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.
এখানে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।
(সিলেবাস – ২০২৫)
Unit – 1:
গণপরিষদের ভূমিকা, ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা ও দর্শন।
Unit – 2:
মৌলিক অধিকার ও মৌলিক কর্তব্য, রাষ্ট্র পরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি।
Unit – 3:
ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃতি ও প্রবণতা, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক, পঞ্চম ও ষষ্ঠ তপশিল, পঞ্চায়েত ও পৌরসভা।
Unit – 4:
কেন্দ্রীয় আইনসভা ও কার্যনির্বাহী: রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ; প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সম্পর্ক।
Unit – 5:
আইন বিভাগ: রাজ্যসভা ও লোকসভার গঠন ও কার্যাবলি; অধ্যক্ষের ভূমিকা।
Unit – 6:
বিচার বিভাগ: সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের গঠন ও কার্যাবলি, বিচার বিভাগের সক্রিয়তা, জনস্বার্থ মামলা।
Unit-1 গণপরিষদ ও প্রস্তাবনা
****1) প্রশ্ন. ভারতীয় সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। ৫/১০
ভূমিকা: ভারতীয় সংবিধান বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও বিস্তৃত সংবিধান। এটি ২৬শে নভেম্বর ১৯৪৯ সালে গৃহীত হয় এবং ২৬শে জানুয়ারি ১৯৫০ সালে কার্যকর হয়। সংবিধান রচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করা। এটি ভারতীয় জনগণের মৌলিক অধিকার, কর্তব্য এবং সরকারের কাঠামো নির্ধারণ করেছে। ভারতের সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ:
১. লিখিত ও সর্ববৃহৎ সংবিধান: ভারতীয় সংবিধান বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম ও বিস্তারিত লিখিত সংবিধান। এটি মোট ২২টি অংশ, ৩৯৫টি অনুচ্ছেদ ও ১২টি তফসিলে বিভক্ত। সংবিধানটি রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা ও নাগরিকদের অধিকার ও দায়িত্ব সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করে।
২. গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা: ভারতীয় সংবিধানে জনগণের শাসনের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন করা হয়েছে। জনগণ তাদের প্রতিনিধিদের সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত করে এবং সরকার জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ।
৩. সার্বভৌমত্ব: ভারত একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র, অর্থাৎ এটি অন্য কোনো রাষ্ট্রের অধীন নয়। সরকার স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতিগুলি সংবিধানের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।
৪. ধর্মনিরপেক্ষতা: ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ধর্মনিরপেক্ষতা। এটি নিশ্চিত করে যে রাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট ধর্মকে সমর্থন করবে না এবং সকল ধর্মের প্রতি সমান আচরণ করবে। নাগরিকদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা সংবিধানে নিশ্চিত করা হয়েছে।
৫. সামাজিক ন্যায়বিচার ও সাম্য: ভারতীয় সংবিধান সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কিছু মৌলিক নীতির ভিত্তি স্থাপন করেছে। এটি জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, জন্মস্থান বা বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিককে সমান অধিকার প্রদান করে। অনগ্রসর শ্রেণির উন্নতির জন্য সংরক্ষণ নীতি ও বিভিন্ন কল্যাণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
৬. মৌলিক অধিকার: সংবিধানের তৃতীয় ভাগে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকারগুলি হলো:
• সমতার অধিকার (অনুচ্ছেদ ১৪-১৮)
• স্বাধীনতার অধিকার (অনুচ্ছেদ ১৯-২২)
• শোষণ থেকে মুক্তির অধিকার (অনুচ্ছেদ ২৩-২৪)
• ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার (অনুচ্ছেদ ২৫-২৮)
• সংস্কৃতি ও শিক্ষার অধিকার (অনুচ্ছেদ ২৯-৩০)
• সাংবিধানিক প্রতিকার লাভের অধিকার (অনুচ্ছেদ ৩২)
৭. মৌলিক কর্তব্য: ১৯৭৬ সালের ৪২তম সংবিধান সংশোধনী দ্বারা সংবিধানের ৫১-ক অনুচ্ছেদে নাগরিকদের জন্য ১১টি মৌলিক কর্তব্য সংযোজন করা হয়। এর মধ্যে জাতীয় ঐক্য রক্ষা, সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা, পরিবেশ সংরক্ষণ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
৮. একক নাগরিকত্ব: ভারতীয় সংবিধানে একক নাগরিকত্বের ব্যবস্থা রয়েছে। অর্থাৎ, ভারতের যে কোনো নাগরিককে শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয়, পৃথক কোনো রাজ্যের নাগরিকত্বের ধারণা নেই।
৯. যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো: ভারতীয় সংবিধান একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো প্রদান করেছে, যেখানে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার পৃথকভাবে তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে। তবে সংবিধানে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা বেশি, যা এটিকে একটি ‘সশক্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা’ বলে পরিচিত করেছে।
১০. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা: সংবিধান বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে, যা গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। সুপ্রিম কোর্ট ও উচ্চ আদালতগুলি সংবিধান ও আইন অনুযায়ী তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে এবং নির্বাহী বিভাগের ওপর নিরপেক্ষভাবে নজরদারি রাখে।
১১. পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থা: ভারতীয় সংবিধানে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের জন্য পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার উল্লেখ রয়েছে। ১৯৯২ সালের ৭৩তম ও ৭৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে গ্রাম ও শহর পর্যায়ে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।
১২. পরিবর্তনশীল সংবিধান: ভারতীয় সংবিধান একটি গতিশীল সংবিধান, যা প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন করা যায়। সংসদের মাধ্যমে এটি সংশোধন করা সম্ভব, যা সময়ের সাথে পরিবর্তিত প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে।
উপসংহার: ভারতীয় সংবিধান একাধারে স্থিতিশীল ও পরিবর্তনশীল। এটি গণতন্ত্র, সাম্য, ধর্মনিরপেক্ষতা, মৌলিক অধিকার ও ন্যায়বিচারের উপর ভিত্তি করে গঠিত। সংবিধানের বিশেষত্বই ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিশালী করে তুলেছে এবং এটি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান হিসেবে পরিচিত।
Unit-2 মৌলিক অধিকার ও কর্তব্য
****2) প্রশ্ন. ভারতের সংবিধানের সংরক্ষিত 'সাংবিধানিক প্রতিবিধানের অধিকার'-টি ব্যাখ্যা কর। (১০)
দলিল, যা ভারতের শাসনতন্ত্র এবং রাজনীতির কাঠামো স্থাপন করেছে। এটি মানুষের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি বিশেষ অধিকার হলো ‘সাংবিধানিক প্রতিবিধানের অধিকার’, যা ভারতীয় নাগরিকদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ববোধের নিদর্শন হিসেবে কাজ করে।
১. সাংবিধানিক প্রতিবিধান: অর্থ ও প্রেক্ষাপট:
‘সাংবিধানিক প্রতিবিধান’ বলতে বোঝানো হয়, এমন একটি অধিকার বা সুবিধা যা সরাসরি সংবিধানে প্রতিষ্ঠিত এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়। এর মাধ্যমে নাগরিকদের কিছু মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকে, এবং রাষ্ট্র যদি সেই অধিকার লঙ্ঘন করে, তাহলে নাগরিকরা আদালতে যেতে পারেন।
২. সংবিধানে সাংবিধানিক প্রতিবিধান সংক্রান্ত বিধান:
ভারতের সংবিধানের 32 নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, 'মৌলিক অধিকার'-এর সুরক্ষা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নাগরিকদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে। এটি ‘প্রতিবিধান অধিকার’ নামে পরিচিত। ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, যদি কেউ নিজের মৌলিক অধিকার ভঙ্গ হওয়া অনুভব করেন, তবে তিনি সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারেন এবং আদালত তার অধিকার সুরক্ষায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
৩. ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে দেওয়া অধিকার:
ভারতের সংবিধান ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে নাগরিকদের ‘সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার’ সুরক্ষিত রাখে। এই অধিকার নাগরিকদের একটি মৌলিক সুরক্ষা প্রস্তাব করে, যেখানে তারা নিজের অধিকার হরণ হওয়ার পর আইনি প্রতিকার প্রাপ্তির অধিকারী হন। সুপ্রিম কোর্ট বা উচ্চ আদালতগুলো নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হলে তাদের পক্ষ থেকে মামলা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকে।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান, কারণ নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে যদি কোনও প্রশ্ন উঠতে থাকে, তখন তারা সরাসরি আদালতে গিয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
৪. সাংবিধানিক প্রতিবিধানের অধিকার এবং তার বাস্তবতা:
ভারতের সংবিধানে মূলত পাঁচটি মৌলিক অধিকার রয়েছে, যেগুলো হলো— অধিকার অনুযায়ী জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সমানতার অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অধিকারের অধিকার এবং সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত করা অন্যান্য অধিকার। যখন রাষ্ট্র এসব অধিকার লঙ্ঘন করে, তখন ওই নাগরিক সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারেন।
এর মাধ্যমে একটি পরিষ্কার ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, যেখানে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিরাপদ থাকে, এবং তারা তা লঙ্ঘিত হলে অবিলম্বে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে কাজ করে, যাতে নাগরিকদের রক্ষায় আদালত অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
৫. সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা:
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ‘সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার’ এর অন্যতম প্রধান রক্ষক। সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, যদি কোনও নাগরিক মনে করেন যে তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, তিনি সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করতে পারেন। সুপ্রিম কোর্ট এই রিট পিটিশনের ভিত্তিতে নাগরিকের অধিকার পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এখানে সুপ্রিম কোর্টের উদাহরণ হিসেবে ‘ম্যানেকশ’ মামলা (Maneka Gandhi v. Union of India, 1978) উল্লেখ করা যেতে পারে, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করেছে যে, মৌলিক অধিকার কেবল আদালতের মাধ্যমে একমাত্র সুরক্ষিত হতে পারে, এবং এই অধিকার লঙ্ঘন হলে জনগণকে সংশ্লিষ্ট আদালতে যাওয়ার অধিকার রয়েছে।
৬. সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার এবং তার সীমাবদ্ধতা:
যদিও ‘সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার’ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তবে এই অধিকার কিছু নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকে। ৪৪তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রকে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে সীমিত করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, রাষ্ট্র নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু অধিকার সীমিত করতে পারে। তবে, এই বিধান শুধুমাত্র সেই অবস্থায় প্রযোজ্য হবে যেখানে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা এবং জনস্বার্থের সঙ্গে এটি সঙ্গতিপূর্ণ থাকে।
৭. সাম্প্রতিক পরিস্থিতি:
ভারতের সংবিধান এবং আদালতগুলো নাগরিকদের সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার সুরক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন সময়ে, এমনকি সমাজের নানা স্তরের মধ্যে সামাজিক পরিবর্তনের জন্য আদালতের সিদ্ধান্তও সরকারের কাছে আদর্শ হয়ে ওঠে।
উপসংহার:
ভারতের সংবিধানের সংরক্ষিত 'সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার' একটি অত্যন্ত মৌলিক ধারণা যা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত রাখে। এটি নাগরিকদের সরকার বা অন্য কোনো শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান দ্বারা লঙ্ঘিত হলে আদালতের মাধ্যমে বিচার পাওয়ার অধিকার দেয়। এই অধিকার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নাগরিকদের একমাত্র নিরাপত্তা প্রদান করে এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলি আইনগতভাবে রক্ষিত রাখে।
Unit-3 ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃতি
*****3) প্রশ্ন. কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা বন্টন এর উপর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর। (৫)
কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা বন্টন ভারতের সংবিধানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ভারতের সংবিধান একটি দ্বি-chamber ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার উভয়েরই কিছু বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে, যা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রের মধ্যে পরিচালনার সুযোগ প্রদান করে। ভারতীয় সংবিধানটি তিনটি তালিকা তৈরি করেছে, যা কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের আইন তৈরির ক্ষমতা নির্ধারণ করে।
১. কেন্দ্রীয় তালিকা (Union List): কেন্দ্রীয় তালিকায় সেই বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার উপর কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার আইন করতে পারে। এটি দেশের বৃহত্তর স্বার্থ এবং জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলির উপর জোর দেয়। উদাহরণস্বরূপ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা, নাগরিকত্ব, দেশের সীমানা ইত্যাদি বিষয় কেন্দ্রীয় সরকারের অধিকারী। কেন্দ্রীয় তালিকায় মোট ১০২টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব।
২. রাজ্য তালিকা (State List): রাজ্য তালিকায় এমন বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার উপর রাজ্য সরকার আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। এসব বিষয় সাধারণত রাজ্যের অভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং জনসাধারণের সেবা সংক্রান্ত হয়ে থাকে। যেমন, রাজ্যের পুলিশ বাহিনী, শিক্ষা, কৃষি, স্থানীয় সরকার এবং আদালত ব্যবস্থা ইত্যাদি। রাজ্য তালিকায় মোট ৬৬টি বিষয় রয়েছে, যা রাজ্য সরকার পরিচালনা করতে পারে।
৩. সম্মিলিত তালিকা (Concurrent List): এটি এমন একটি তালিকা, যেখানে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার উভয়ই আইন প্রণয়ন করতে পারে। তবে যদি এই দুই সরকারের মধ্যে কোনো বিরোধ বা সংঘর্ষ ঘটে, তবে কেন্দ্রীয় আইন প্রাধান্য পাবে। সম্মিলিত তালিকায় ৫২টি বিষয় রয়েছে, যা কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়েই প্রযোজ্য। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষা, পরিবহন, স্বাস্থ্য, শ্রম ইত্যাদি বিষয় সম্মিলিত তালিকার অন্তর্ভুক্ত।
৪. আইন সংক্রান্ত ক্ষমতার বন্টন: ভারতের সংবিধানে আইন সংক্রান্ত ক্ষমতার বন্টন কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে তৈরি করা হয়েছে। তবে বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে, যখন কেন্দ্রীয় সরকার মনে করে যে রাজ্যগুলির মধ্যে কোনো সমস্যা বা বিপদ ঘটতে পারে, তখন কেন্দ্র সরকার রাজ্যের আইনগত ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে পারে। এই পরিস্থিতি সংবিধানের ৩৫৫ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত, যা রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা বা রাষ্ট্রীয় বিপর্যয়ের সময় কার্যকরী হয়।
৫. অতিরিক্ত ক্ষমতা: তবে, ভারতের সংবিধান কিছু অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদান করেছে, যা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতেই রয়ে গেছে। যেমন, ভারতের রাষ্ট্রপতি বা কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ কিছু কারণে রাজ্যের ওপর আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে, বা রাজ্য সরকারকে সরিয়ে দিতে পারে। এটা মূলত ভারতের সংবিধানে দেওয়া 'কেন্দ্রীয় শাসন' (President's Rule) পদ্ধতির অংশ।
৬. কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্পর্ক: কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্পর্ক মূলত সহযোগিতা ও সমঝোতার ভিত্তিতে গঠিত। উভয় সরকার তাদের নিজ নিজ কর্তৃত্বের সীমার মধ্যে আইন প্রণয়ন করে, তবে মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে বিরোধও সৃষ্টি হতে পারে। এসব বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি নিরপেক্ষ সংস্থা হিসেবে কাজ করে। যেহেতু ভারতের সংবিধানে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের আইনগত ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারিত রয়েছে, তাই এই ক্ষমতা বন্টন সংক্রান্ত কোনো অস্বচ্ছতা সৃষ্টি হয়নি।
উপসংহার: কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে আইন সংক্রান্ত ক্ষমতার বন্টন ভারতের সংবিধানে অত্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত রয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের দায়িত্ব এবং কার্যাবলী স্পষ্টভাবে ভাগ করা হয়েছে, যা দেশের শাসনব্যবস্থা সুষ্ঠু ও কার্যকর রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক। তবে, মাঝে মাঝে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতা সংঘর্ষ দেখা দেয়, কিন্তু সেগুলি সমাধান করার জন্য সংবিধান একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া তৈরি করেছে। এভাবে, আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা বন্টন কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করে এবং দেশের শাসনব্যবস্থাকে সুসংগঠিত রাখে।
Unit-5 আইন বিভাগ: রাজ্যসভা ও লোকসভার গঠন, কার্যাবলি এবং সভাপতির ভূমিকা।
*****4) প্রশ্ন.লোকসভার অধ্যক্ষ বা স্পিকারের ক্ষমতাও কার্যাবলী সংক্ষেপে আলোচনা কর। (৫)
লোকসভার অধ্যক্ষের নিয়োগ ও মেয়াদ: লোকসভার প্রথম অধিবেশনে সাংসদদের মধ্য থেকে অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। তিনি সাধারণত সেই রাজনৈতিক দলের সদস্য হন, যাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকে। অধ্যক্ষের মেয়াদ পাঁচ বছর হলেও, নতুন লোকসভা গঠিত হওয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে থাকেন। তিনি ইচ্ছা করলে পদত্যাগ করতে পারেন বা অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে তাকে অপসারণ করা যেতে পারে।
লোকসভার অধ্যক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলী: লোকসভার অধ্যক্ষের ক্ষমতা এবং দায়িত্ব বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক থেকে আলোচিত হতে পারে:
- সংসদের কার্যক্রম পরিচালনা: অধ্যক্ষ সংসদের অধিবেশন পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। সংসদের আলোচনা নিয়ন্ত্রণ করা, সংসদ সদস্যদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং আলোচনার জন্য বিভিন্ন বিষয় নির্বাচন করা তার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে পড়ে।
- শৃঙ্খলা রক্ষা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ: অধ্যক্ষ সংসদের ভেতরে শৃঙ্খলা বজায় রাখেন এবং কোনো সদস্য অসংযত আচরণ করলে তাকে সতর্ক করেন বা প্রয়োজনে সংসদ থেকে বহিষ্কার করতে পারেন। যদি কোনো সদস্য নিয়ম লঙ্ঘন করেন, তবে অধ্যক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন।
- ভোটদান সংক্রান্ত ক্ষমতা: লোকসভার অধ্যক্ষ সাধারণত ভোট প্রদান করেন না। তবে, যদি ভোটের সময় সমান সংখ্যক সমর্থন ও বিরোধিতা দেখা যায়, তখন অধ্যক্ষের ‘কাস্টিং ভোট’ দেওয়ার ক্ষমতা থাকে, যা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করতে পারে।
- অর্থবিল সংক্রান্ত ক্ষমতা: অর্থবিল সংক্রান্ত বিষয়ে অধ্যক্ষের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে কোনো বিল অর্থবিল কি না। অর্থবিল হলে তা রাজ্যসভার অনুমোদন ছাড়াই পাশ হতে পারে।
- কমিটি গঠন ও সভাপতিত্ব: অধ্যক্ষ সংসদের বিভিন্ন কমিটি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং তিনি বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সদস্য মনোনয়ন দেন। তিনি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, এস্টিমেট কমিটি এবং পিটিশন কমিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলোর সদস্য মনোনীত করেন।
- অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ: যদি লোকসভায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়, তবে তিনি সেই বিষয়ে আলোচনার অনুমতি দেন এবং ভোটাভুটি পরিচালনা করেন। তবে, অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হলে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
- অযোগ্যতা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত: দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় কোনো সংসদ সদস্যের সদস্যপদ থাকবে কি না, তা নির্ধারণের ক্ষমতা অধ্যক্ষের হাতে থাকে। দলীয় হুইপ অমান্য করে ভোট দিলে বা দলের বিরুদ্ধে কাজ করলে অধ্যক্ষ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
- রাষ্ট্রপতির বার্তা ও সংসদের আহ্বান: অধ্যক্ষ রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে প্রাপ্ত বার্তাগুলো সংসদে উপস্থাপন করেন এবং লোকসভার অধিবেশন আহ্বান ও মুলতবি করার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেন।
- গোপন বৈঠক আহ্বান: কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে যদি অধ্যক্ষ মনে করেন যে সংসদের আলোচনাগুলো গোপন রাখা উচিত, তবে তিনি গোপন বৈঠকের আয়োজন করতে পারেন। এই ধরনের বৈঠকের তথ্য বাইরে প্রকাশ করা নিষিদ্ধ।
- সদস্যদের বক্তব্য পরিচালনা: লোকসভার অধ্যক্ষ সংসদ সদস্যদের বক্তব্য প্রদানের জন্য সময় নির্ধারণ করেন এবং যদি কোনো সদস্য নির্ধারিত সময় অতিক্রম করেন, তবে তিনি তাদের বক্তব্য সংক্ষেপ করতে বা থামিয়ে দিতে পারেন।
উপসংহার: লোকসভার অধ্যক্ষ ভারতের সংসদীয় ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান ব্যক্তি। তিনি নিরপেক্ষভাবে কাজ করেন এবং সংসদের শৃঙ্খলা ও কার্যকারিতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার ক্ষমতা এবং দায়িত্ব ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং সংসদীয় শাসনব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনাকে নিশ্চিত করে।
Unit:6: বিচার বিভাগ: সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের গঠন ও কার্যাবলী, বিচার বিভাগীয় সক্রিয়তা, জনস্বার্থ মামলা
*****5) প্রশ্ন. ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী বর্ণনাকর। ১০
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী:
ভূমিকা: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়, যা সংবিধানের রক্ষক ও শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট তার কার্যক্রম শুরু করে। এটি বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ স্তর এবং আইন, সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করে। সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সংবিধানের বিভিন্ন ধারায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের গঠন: ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিরা রাষ্ট্রপতির দ্বারা নিযুক্ত হন। সংবিধানের ১২৪ নম্বর ধারার অধীনে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের সংখ্যা রাষ্ট্রপতির দ্বারা নির্ধারিত হয়।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ক্ষমতা ও কার্যাবলী: ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সংবিধানের বিভিন্ন ধারায় বর্ণিত হয়েছে। নিচে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা ও কার্যাবলীর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:
১. সংবিধান রক্ষক হিসেবে ভূমিকা: সুপ্রিম কোর্ট ভারতীয় সংবিধানের রক্ষক ও ব্যাখ্যাকারী হিসেবে কাজ করে। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামো বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
২. মূল বিচারিক ক্ষমতা (Original Jurisdiction): সংবিধানের ১৩১ নম্বর ধারায় সুপ্রিম কোর্টের মূল বিচারিক ক্ষমতা সংজ্ঞায়িত হয়েছে। যদি কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বা বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে কোনো বিরোধ সৃষ্টি হয়, তবে সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি সেই মামলা গ্রহণ করতে পারে।
৩. আপিল বিভাগের ক্ষমতা (Appellate Jurisdiction): সংবিধানের ১৩২, ১৩৩ ও ১৩৪ নম্বর ধারায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ক্ষমতা নির্ধারিত হয়েছে। নিম্ন আদালতে সিদ্ধান্তপ্রাপ্ত ফৌজদারি, দেওয়ানি ও সংবিধান সংক্রান্ত মামলাগুলি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা যায়।
৪. পরামর্শমূলক ক্ষমতা (Advisory Jurisdiction): সংবিধানের ১৪৩ নম্বর ধারায় রাষ্ট্রপতিকে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি কোনো সাংবিধানিক বা আইনি বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাইতে পারেন।
৫. মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ: সংবিধানের ৩২ নম্বর ধারা সুপ্রিম কোর্টকে মৌলিক অধিকার রক্ষার ক্ষমতা প্রদান করেছে। যদি কোনো নাগরিকের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তবে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারে।
৬. বিচারিক পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা (Judicial Review): সংবিধানের ১৩ নম্বর ধারার অধীনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা রয়েছে। যদি কোনো আইন সংবিধান-বিরোধী হয়, তাহলে সুপ্রিম কোর্ট সেই আইন বাতিল করতে পারে।
৭. বিশেষ ছাড়পত্র (Special Leave Petition - SLP): সংবিধানের ১৩৬ নম্বর ধারার অধীনে সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ ছাড়পত্রের ভিত্তিতে যে কোনো আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করতে পারে।
৮. উচ্চ আদালতগুলোর তত্ত্বাবধান: সুপ্রিম কোর্ট ভারতের সমস্ত উচ্চ আদালতের উপর তত্ত্বাবধান রাখে এবং আইনি বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
৯. চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদানকারী সংস্থা: সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় চূড়ান্ত এবং এটি অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক। কোনো আদালত সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে পাল্টাতে পারে না।
১০. নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তি: সংবিধানের ৭১ নম্বর ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতির নির্বাচনের বিষয়ে কোনো বিরোধ হলে সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলা গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারে।
উপসংহার: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গণতন্ত্রের রক্ষক এবং সংবিধানের সর্বোচ্চ ব্যাখ্যাকারী হিসেবে কাজ করে। এটি মৌলিক অধিকার রক্ষা, আইন সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের বিচার ব্যবস্থার মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে। এর ক্ষমতা ও কার্যাবলী ভারতীয় আইনের শাসনকে সুসংহত করে এবং সাধারণ নাগরিকদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করে।