Kalyani University Suggestion
Kalyani University B.A 3rd Semester Political Science Minor Nep Suggestions 2026
Indian Foreign Policy in a Globalizing World
Kalyani University B.A 3rd Semester Political Science Minor Nep ছোট প্রশ্ন, বড়ো প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন PDF টি পেতে.. তুমি 99 টাকা পেমেন্ট কর। পেমেন্টের পর এক সেকেন্ডের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত সাজেশনটি পাবে। ধন্যবাদ। টাকা টি পেমেন্ট করার জন্য নিচে PAY বাটনে ক্লিক কর।
তুমি চাইলে সরাসরি PhonePe-এর মাধ্যমে 99 টাকা পেমেন্ট করে সাজেশন সংগ্রহ করতে পার। PhonePe নম্বর: 6295668424 (পেমেন্টের পর স্ক্রিনশট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠালে PDF COPY পাঠিয়ে দেব।)
My Phone Number- 6295668424
সম্পূর্ণ সাজেশন টি ইউটিউবে দেখানো হয়েছে তুমি দেখে আসতে পারো।
• এই সাজেশনের বড়ো প্রশ্ন সংখ্যা 28 টি।
ছোট প্রশ্ন প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন পাবেন।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজেশনেরর বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজেশনের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট
অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.
এখানে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।
(সিলেবাস – ২০২৬)
Indian Foreign Policy in a Globalizing World
Unit–1: English: India’s Foreign Policy: From a Postcolonial State to an Aspiring Global Power
বাংলা: ভারতের পররাষ্ট্রনীতি — একটি উত্তর-ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র থেকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী বৈশ্বিক শক্তিতে রূপান্তর।
Unit–2: English: India’s Relations with the USA and USSR/Russia
বাংলা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউএসএসআর/রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক।
Unit–3: English: India’s Engagements with China
বাংলা: চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পৃক্ততা ও পারস্পরিক সম্পর্ক।
Unit–4: English: India in South Asia: Debating Regional Strategies
বাংলা: দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত — আঞ্চলিক কৌশল নিয়ে বিতর্ক।
Unit–5: English: India’s Negotiating Style and Strategies: Trade, Environment, Energy, and Security Regimes
বাংলা: ভারতের আলোচনা কৌশল ও পদ্ধতি — বাণিজ্য, পরিবেশ, শক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
Unit–1: ভারতের পররাষ্ট্রনীতি
*****1) প্রশ্ন. ভারতের পররাষ্ট্রনীতি বা বিদেশনীতির মূল লক্ষ্যগুলি আলোচনা করো।৫/১০
ভূমিকা: প্রতিটি রাষ্ট্রের একটি নির্দিষ্ট পররাষ্ট্রনীতি বা বিদেশনীতি থাকে যা তাকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তার স্বার্থ রক্ষা করতে সহায়তা করে। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ হওয়ার কারণে তার পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বহুমাত্রিক। স্বাধীনতা লাভের পর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু দেশের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি স্থাপন করেন। ভারত সব সময় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং উন্নয়নের পথ অনুসরণ করে। বর্তমানে বিশ্বের পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভারতের বিদেশনীতি সময়োপযোগী ও বাস্তবভিত্তিক হয়ে উঠেছে।
ভারতের পররাষ্ট্রনীতির ধারণা: পররাষ্ট্রনীতি বলতে বোঝায় অন্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য একটি দেশের নেওয়া কৌশলগত পদক্ষেপসমূহ। এটি দেশের নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কূটনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য, এবং আন্তর্জাতিক প্রভাব বৃদ্ধির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।
ভারতের পররাষ্ট্রনীতির মূল লক্ষ্যসমূহ: ভারতের পররাষ্ট্রনীতির বিভিন্ন লক্ষ্য আছে যা সময়ের প্রেক্ষিতে রূপান্তরিত হলেও কিছু মৌলিক উদ্দেশ্য বরাবরই একই থেকেছে। নিচে ভারতের বিদেশনীতির প্রধান লক্ষ্যগুলি আলোচনা করা হলো—
১. জাতীয় স্বার্থের সংরক্ষণ: ভারতের বিদেশনীতির প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হলো দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষা করা। চীন, পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা ও সন্ত্রাসবাদের মতো ইস্যুগুলিতে ভারত সবসময় কূটনৈতিক এবং প্রয়োজনে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ করে।
২. আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা: ভারত সবসময় জাতিসংঘের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতিতে বিশ্বাসী। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ভারত সর্বাধিক সংখ্যক সৈন্য পাঠানো দেশগুলির অন্যতম। যুদ্ধ, সহিংসতা বা আগ্রাসী নীতি নয় বরং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথেই ভারত বিশ্বাস করে।
৩. অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: বিকাশশীল দেশ হিসেবে ভারতের জন্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বৈদেশিক বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশি বিনিয়োগ, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি, মুক্ত বাণিজ্য এলাকা ইত্যাদির মাধ্যমে ভারত তার অর্থনৈতিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়। ভারতের ‘Act East Policy’, ‘Look West Policy’, এবং আফ্রিকার সঙ্গে সহযোগিতা এই উদ্দেশ্যেই পরিচালিত।
৪. প্রতিবেশীপ্রথম নীতি (Neighbourhood First Policy): ভারত তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে অগ্রাধিকার দেয়। বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ প্রভৃতি দেশের সঙ্গে সংস্কৃতি, বাণিজ্য, জলসম্পদ, নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা জোরদার করতে ভারত সবসময় সচেষ্ট। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সন্ত্রাসবাদ ও কাশ্মীর সমস্যার কারণে জটিলতর।
৫. আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভূমিকা বৃদ্ধি: ভারতের বৃহত্তর লক্ষ্য হল আঞ্চলিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদের দাবিদার ভারত এশিয়া ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উন্নয়ন, শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং মহাকাশ গবেষণায় সহায়তা করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করছে।
৬. নিরপেক্ষতা ও অহিংসার নীতি: নেহেরুর গৃহীত ‘নন অ্যালাইন্ড মুভমেন্ট’ বা জোট নিরপেক্ষ নীতি ভারতের প্রাচীন মূল্যবোধ অহিংসা ও শান্তির প্রতিফলন। শীতল যুদ্ধের সময় ভারত কোনো শক্তিধর ব্লকের সদস্য না হয়ে স্বাধীন নীতি অনুসরণ করেছে এবং বর্তমানেও সেই চেতনা ধরে রেখেছে।
৭. পরমাণু অস্ত্র ও নিরাপত্তা নীতি: ভারত একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ হওয়া সত্ত্বেও "No First Use Policy" মেনে চলে, অর্থাৎ ভারত কখনো প্রথমে পারমাণবিক হামলা চালাবে না, তবে আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে জবাব দিতে পারে। এই দায়িত্বশীল পরমাণু নীতি আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত।
৮. সাংস্কৃতিক কূটনীতি ও সফট পাওয়ার ব্যবহার: ভারত তার প্রাচীন সংস্কৃতি, যোগ, আয়ুর্বেদ, বলিউড, ভারতীয় খাদ্য ও ভাষার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করেছে। এ ধরণের সফট পাওয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
৯. বৈদেশিক ভারতীয়দের (NRIs) সুরক্ষা ও সহায়তা: বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাও ভারতের বিদেশনীতির অন্যতম লক্ষ্য। জরুরি অবস্থায় যেমন যুদ্ধ, মহামারি বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় ভারত সরকার তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করে (যেমন 'Operation Ganga', 'Vande Bharat Mission')।
১০. জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়নের অঙ্গীকার: আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে ভারত সবসময় উন্নয়নশীল দেশগুলির কণ্ঠস্বর হিসেবে জলবায়ু ন্যায়বিচারের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে। আন্তর্জাতিক সৌরজোট (International Solar Alliance) গঠনের মাধ্যমে ভারত টেকসই উন্নয়নে তার দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছে।
উপসংহার: ভারতের পররাষ্ট্রনীতি হলো একটি ভারসাম্যপূর্ণ, বহুমাত্রিক ও গতিশীল কৌশল যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করে তুলছে। জাতীয় স্বার্থ রক্ষা, আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠা, প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন, বৈশ্বিক নেতৃত্বের প্রতি আগ্রহ—সব মিলিয়ে ভারতের বিদেশনীতি ক্রমাগত বিকশিত ও আধুনিক হয়ে উঠছে।
Unit–2: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউএসএসআর/রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক।
*****2) প্রশ্ন.ভারত ও রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি নিয়ে আলোচনা কর। (৫) অথবা, বহুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থায় ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের দিকগুলি চিহ্নিত করো। (১০)
ভারত ও রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি: ভারত ও রাশিয়া, দু'টি দেশই বহু বছর ধরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে একে অপরের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এই সম্পর্কের ইতিহাস প্রাচীন, যা সোভিয়েত যুগের সময় থেকে আজ পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে উন্নতি লাভ করেছে। রাশিয়া, পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার একটি বৃহৎ দেশ এবং ভারত, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী দেশ। এই দুই দেশের সম্পর্ক আন্তর্জাতিক মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, বিশেষত বহুমুখী সম্পর্কের মধ্যে। আজকের দিনে, ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্কের অনেক দিক রয়েছে, যার মধ্যে রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা, এবং কূটনীতি অন্তর্ভুক্ত।
১. রাজনৈতিক সম্পর্ক: ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি হল দীর্ঘদিনের পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতা। সোভিয়েত ইউনিয়ন পরবর্তী সময়েও রাশিয়া ভারতের একটি বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে রয়ে গেছে। ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক সোভিয়েত যুগের সময় শুরু হয়েছিল এবং সেই সময় থেকে দুটি দেশের মধ্যে অটুট বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। রাশিয়া ভারতের স্বাধীনতার পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদে সমর্থন প্রদান করেছে। আজও, এই দুই দেশ একে অপরকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমর্থন দিয়ে থাকে।
২. অর্থনৈতিক সম্পর্ক: অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, ভারত ও রাশিয়া বিভিন্ন সেক্টরে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য কাজ করছে। রাশিয়া ভারতকে শক্তি উৎপাদন এবং বৈদেশিক বাণিজ্যে সমর্থন প্রদান করে। ভারত রাশিয়ার জন্য অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার এবং রাশিয়া ভারতের জন্য প্রধান শক্তি উৎস। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ভারত-রাশিয়া বাণিজ্য বৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের মধ্যে তেল, গ্যাস, খনিজ, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বাড়ানো হয়েছে।
৩. প্রতিরক্ষা সম্পর্ক: প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে, ভারত ও রাশিয়া একে অপরের অঙ্গীকারবদ্ধ সহযোগী। রাশিয়া ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে এবং রাশিয়া ভারতের অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভারত রাশিয়া থেকে অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র, মিসাইল সিস্টেম এবং যুদ্ধবিমান ক্রয় করে থাকে। এছাড়াও, উভয় দেশ একে অপরের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া পরিচালনা করে থাকে, যা তাদের সামরিক সহযোগিতা ও প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করে।
৪. সাংস্কৃতিক সম্পর্ক: ভারত ও রাশিয়ার সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ইতিহাসও বহু পুরনো। রাশিয়ার জনগণ ভারতের সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা করে এবং ভারতের চলচ্চিত্র, সাহিত্য, সঙ্গীত, নৃত্য ইত্যাদি রাশিয়ায় জনপ্রিয়। একইভাবে, ভারতীয় জনগণও রাশিয়ার সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী। দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান, সাহিত্য, চলচ্চিত্র এবং সঙ্গীত ক্ষেত্রে নিয়মিত সহযোগিতা হয়।
৫. বহুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থায় ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক: বহুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা একাধিক শক্তির সম্মিলনে বিশ্বব্যবস্থা পরিচালনা করতে চায়। ভারত ও রাশিয়া এই বহুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার উন্নয়নে একে অপরকে সমর্থন করে থাকে। ভারত জাতিসংঘে একটি স্থায়ী সদস্যপদ দাবি করে আসছে এবং রাশিয়া ভারতকে সমর্থন করছে। ভারত ও রাশিয়া একযোগে শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) এবং ব্রিকস-এর মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাজ করে। এভাবে, দুই দেশই বহুপাক্ষিক এবং বহুকেন্দ্রিক সহযোগিতায় অবদান রাখছে।
৬. সাম্প্রতিক প্রবণতা: সাম্প্রতিক সময়ে, ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক কিছু নতুন মাত্রা পেয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলেও, ভারত রাশিয়ার প্রতি তার সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। এই সময়ে, ভারত রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি বৃদ্ধি করেছে, যার ফলে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। পাশাপাশি, বিশ্বব্যাপী চীনের প্রভাব বাড়ার কারণে ভারত ও রাশিয়া একে অপরকে আরও কাছে টেনে নিয়ে আসছে। রাশিয়া ও ভারত একে অপরকে বহির্বিশ্বে সমর্থন প্রদান করে, যা তাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী করে।
৭. ভারতের এবং রাশিয়ার সম্পর্কের ইতিবাচক দিকগুলি: ভারত এবং রাশিয়ার সম্পর্কের বেশ কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। প্রথমত, এই সম্পর্কের ভিত্তি হল পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং আস্থা। দ্বিতীয়ত, দুই দেশই একে অপরের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতায় অতুলনীয়। তৃতীয়ত, ভারত ও রাশিয়া একে অপরকে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগী হিসেবে দেখে, যা তাদের সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করেছে। চতুর্থত, বিশ্ববাজারে দুই দেশের পণ্যের চাহিদা বাড়ানোর জন্য একসাথে কাজ করছে।
উপসংহার: ভারত ও রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাস দীর্ঘ এবং শক্তিশালী। এই সম্পর্কের বিভিন্ন দিক যেমন রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং সংস্কৃতি একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করেছে। সাম্প্রতিক প্রবণতার মধ্যে, ভারত ও রাশিয়া একে অপরের সহায়ক হয়ে উঠেছে এবং বহুবিধ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একে অপরকে সমর্থন করছে। এভাবে, ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের ইতিবাচক দিকগুলি ভবিষ্যতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
Unit–3: চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পৃক্ততা ও পারস্পরিক সম্পর্ক।
*****3) প্রশ্ন. সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ইন্দো-চীন সম্পর্ক পর্যালোচনা করো। (১০) অথবা, ঠান্ডা যুদ্ধ যুগে ভারত-চীন সম্পর্ক নিয়ে একটি টীকা লেখো। (১০) [২০২৪]
ভূমিকা: বিশ্ব রাজনীতির গতিপ্রকৃতি দিন দিন পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং এই পরিবর্তনের মধ্যেই ভারত ও চীনের সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। দুই এশীয় মহাশক্তির মধ্যকার সম্পর্ক বিভিন্ন পর্যায়ে বহুবার পরিবর্তিত হয়েছে—মৈত্রী থেকে সংঘর্ষ, প্রতিযোগিতা থেকে সহযোগিতা। ঠান্ডা যুদ্ধের যুগ থেকে শুরু করে বর্তমান বহু-মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বের প্রেক্ষিতে এই সম্পর্ক এখন এক জটিল রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে।
ইতিহাসের পটভূমি: ভারত ও চীনের সম্পর্ক প্রাচীন সভ্যতা থেকেই চলে আসছে। কিন্তু আধুনিক কালে, বিশেষত স্বাধীনতার পর ভারত-চীন সম্পর্ক প্রথমদিকে ছিল সহযোগিতামূলক। “হিন্দি চিনি ভাই ভাই” স্লোগানে দুই দেশের বন্ধুত্বের আশ্বাস মিলেছিল। কিন্তু ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধ সেই সম্পর্কের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। চীন কর্তৃক আকসাই চিন দখল এবং অরুণাচল প্রদেশকে তাদের এলাকা দাবি করা ভারতীয় ভূখণ্ড নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করে। এরপর দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের সম্পর্ক অবিশ্বাস ও সন্দেহের ছায়ায় ঘেরা থাকে।
ঠান্ডা যুদ্ধ যুগে ভারত-চীন সম্পর্ক: ঠান্ডা যুদ্ধ যুগে বিশ্ব মূলত দুইটি মেরুতে বিভক্ত ছিল—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে দুটি শক্তি ব্লক। ভারত তার গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করার পাশাপাশি নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করেছিল। অপরদিকে চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত উভয়ের সঙ্গে কৌশলগত দন্দ্বে লিপ্ত ছিল। ফলে ভারত ও চীনের মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দেয়।
১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর ভারতের নিরাপত্তা নীতি পরিবর্তিত হয় এবং চীনের ওপর একরকম অনাস্থা তৈরি হয়। ১৯৭৫ সালে সিকিমকে ভারতের রাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার ঘটনাও চীনের সঙ্গে সম্পর্কে চির ধরায়। তবুও উভয় দেশ একে অপরকে স্বীকৃতি প্রদান করে এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা অব্যাহত রাখে।
সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ইন্দো-চীন সম্পর্ক: ২১শ শতকে এসে ভারত ও চীন দুই দেশেরই অর্থনৈতিক উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। উভয় দেশই বিশ্ব রাজনীতির প্রধান শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে। তবে এই সময়ে সম্পর্ক জটিলতর হয়েছে একাধিক কারণে—
১. সীমান্ত বিরোধ ও গালওয়ান সংঘর্ষ (২০২০): লাদাখ সীমান্তে ২০২০ সালে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রাণহানি ঘটে। এই ঘটনা ১৯৭৫ সালের পর প্রথমবারের মতো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত হয়। এতে দুই দেশের মধ্যে আবারো উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়ে।
২. বাণিজ্যিক সম্পর্ক: যদিও সীমান্তে উত্তেজনা রয়েছে, তথাপি বাণিজ্যিকভাবে ভারত-চীন সম্পর্ক এখনও গুরুত্বপূর্ণ। চীন ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। তবে ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ নীতি এবং চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধকরণ, সীমান্তবর্তী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রভৃতি পদক্ষেপে চীনের উপর নির্ভরতা কমানোর প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে।
৩. কৌশলগত প্রতিযোগিতা: ইন্দো-প্যাসিফিক ও কোয়াড: চীন ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ (BRI) মাধ্যমে গোটা এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করছে। অপরদিকে ভারত যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কৌশলগত জোট ‘QUAD’-এর অংশ হয়ে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব রুখতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। এতে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত প্রতিযোগিতা তীব্র হয়েছে।
৪. ভূ-রাজনৈতিক পালাবদল ও রাশিয়া-চীন ঘনিষ্ঠতা: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-চীন ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে ভারত একদিকে রাশিয়ার ঐতিহ্যগত বন্ধু হলেও, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। এই দ্বৈত অবস্থান চীন-ভারত সম্পর্কে একটি অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
বহু-মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বের প্রেক্ষিতে ভারত-চীন সম্পর্ক: বর্তমানে বিশ্বের শক্তির কেন্দ্র একক না হয়ে বহুমাত্রিক বা বহু-মেরুকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারত ও চীনের সম্পর্ক নতুনভাবে মূল্যায়নের দাবি রাখে।
১. অর্থনৈতিক সহ-অবস্থান ও প্রতিযোগিতা: চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি, এবং ভারত দ্রুত উন্নয়নশীল বৃহৎ বাজার। এই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতা থাকা সত্ত্বেও কিছু ক্ষেত্রে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা রয়েছে, যেমন—ইলেকট্রনিক্স, ফার্মাসিউটিক্যাল, কাঁচামাল ইত্যাদি।
২. আঞ্চলিক সংগঠন ও যৌথ প্ল্যাটফর্ম: উভয় দেশ BRICS, SCO (Shanghai Cooperation Organization) ও G20-এর সদস্য। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে তারা মাঝে মাঝে সহযোগিতার ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু আঞ্চলিক নেতৃত্বের প্রশ্নে দ্বন্দ্ব থেকেই যায়—বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের আধিপত্য চীন মেনে নিতে চায় না।
৩. পাকিস্তান সংক্রান্ত অবস্থান: চীনের পাকিস্তান-চীন অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) ও কাশ্মীর ইস্যুতে চীনের অবস্থান ভারতের উদ্বেগ সৃষ্টি করে। চীনের অব্যাহত পাকিস্তান-সমর্থন সম্পর্কের অন্যতম অন্তরায়।
ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি: ভারত ও চীনের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান গঠনের জন্য উভয় পক্ষকে কূটনৈতিক ও কৌশলগত স্তরে সচেতন হতে হবে। সীমান্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধান, বিশ্বাস গড়ে তোলা, এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করলে এই সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেতে পারে।
সম্ভাব্য করণীয়:
- সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তি হালনাগাদ করা
- পরস্পরের অর্থনীতিতে প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ বাড়ানো
- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে নিয়মিত সংলাপ ও সামরিক স্তরে যোগাযোগ বজায় রাখা
- আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় একসঙ্গে কাজ করা
উপসংহার: ভারত-চীন সম্পর্ক এক জটিল কিন্তু সম্ভাবনাময় অধ্যায়। অতীতের সংঘর্ষ ও বর্তমানের প্রতিযোগিতা সত্ত্বেও, এই দুই দেশের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতাই আগামী দিনের এশীয় রাজনীতিকে একটি নতুন দিশা দিতে পারে। বহু-মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বের প্রেক্ষাপটে ভারত ও চীন যদি পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কাজ করে, তবে তা শুধু দুই দেশের নয়, বরং গোটা বিশ্বের জন্যই লাভজনক হবে।
Unit–5: ভারতের আলোচনা কৌশল ও পদ্ধতি — বাণিজ্য, পরিবেশ, শক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
*****4) প্রশ্ন. বিমসটেক (BIMSTEC)-এর মূল লক্ষ্য কী ছিল? (৫)
Ans: বিমসটেক (BIMSTEC) হলো একটি আঞ্চলিক সংস্থা: যা দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা এবং সমন্বয় সাধনের জন্য গঠিত হয়েছে। বিমসটেক-এর পূর্ণরূপ হলো বঙ্গবন্ধু আঞ্চলিক কর্মসূচি বা বঙ্গোপসাগর উদ্যোগ (Bay of Bengal Initiative for Multi-Sectoral Technical and Economic Cooperation)। এই সংস্থাটি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটি ৭টি সদস্য দেশ নিয়ে গঠিত, যেগুলি হল: বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভুটান, এবং নেপাল।
বিমসটেক-এর লক্ষ্য ছিল এবং এখনও রয়েছে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে বহুমুখী আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি সাধন করা। এটি বিভিন্ন অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত, এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে সদস্য দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক উন্নয়ন ঘটানোর উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে। নিম্নলিখিত মূল লক্ষ্যগুলি বিমসটেক-এর লক্ষ্য ছিল:
১. অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি: বিমসটেক-এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল সদস্য দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি সাধন। এ উদ্দেশ্যে, বিমসটেক সদস্য দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিমসটেক-এর মাধ্যমে, সদস্য দেশগুলি আঞ্চলিক বাণিজ্য ও আর্থিক সম্পর্কের ভিত্তি শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছে। এছাড়া, বিমান পরিবহন, নৌ পরিবহন, এবং সড়ক যোগাযোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেছে।
২. প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও শিক্ষা: বিমসটেক-এর আরেকটি লক্ষ্য ছিল সদস্য দেশগুলির মধ্যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা এবং তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়ন। বিমসটেক উদ্যোগটি শিক্ষার ক্ষেত্রে, বিশেষত প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, ও মানবসম্পদ উন্নয়নে একে অপরকে সাহায্য করতে চেয়েছিল। সদস্য দেশগুলির মধ্যে সমন্বিত গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে সমষ্টিগত সাফল্য অর্জন করার লক্ষ্যও ছিল বিমসটেক-এর।
৩. পরিবেশ সংরক্ষণ: বিমসটেক-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ছিল পরিবেশের সুরক্ষা এবং প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের দেশগুলি জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত বিপদে বিপন্ন। এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা এবং সেগুলির টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বিমসটেক সদস্য দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চেয়েছিল।
৪. নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ: বিমসটেক-এর আরেকটি লক্ষ্য ছিল সদস্য দেশগুলির মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়ানো, বিশেষত সন্ত্রাসবাদ, মাদকদ্রব্য পাচার, মানব পাচার, এবং সীমান্ত পেরিয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করা। আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং সীমান্ত পারের অপরাধপ্রবণতা কমানোর জন্য বিমসটেক সদস্য দেশগুলি যৌথভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য কাজ করেছে।
৫. সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সহযোগিতা: বিমসটেক-এর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ছিল আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উন্নয়ন। সদস্য দেশগুলি একে অপরের সংস্কৃতি, ভাষা, ধর্ম, এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে আরো সচেতন হতে চেয়েছিল। সাংস্কৃতিক বিনিময়, পর্যটন এবং মিউচুয়াল অ্যাপ্রিসিয়েশন প্রোগ্রামগুলি চালু করে আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং সম্প্রীতি গড়ে তোলার জন্য কাজ করেছে বিমসটেক।
৬. আঞ্চলিক সংহতি এবং সহযোগিতার শক্তি বৃদ্ধি: বিমসটেক প্রতিষ্ঠার অন্যতম লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে আঞ্চলিক সংহতি ও সহযোগিতাকে শক্তিশালী করা। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে বিমসটেক সদস্য দেশগুলি একত্রিত হয়ে তাদের কূটনৈতিক অবস্থান তৈরি করতে সাহায্য করেছে। এছাড়া, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখতে বিমসটেক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে।
৭. উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য সহযোগিতা: বিমসটেক-এর আরেকটি লক্ষ্য ছিল সেই সব দেশগুলির জন্য সহযোগিতা প্রদান করা, যারা এখনও উন্নয়নশীল পর্যায়ে রয়েছে। বিমসটেক সদস্য দেশগুলির মধ্যে বিভিন্ন প্রোগ্রাম চালু হয়েছে, যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্ঞান ভিত্তিক উন্নয়ন, কৃষি ও কৃষক সহায়তা, যা এসব দেশগুলির উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করেছে।
উপসংহার: বিমসটেক-এর মূল লক্ষ্যগুলি ছিল আঞ্চলিক সহযোগিতা: এবং সদস্য দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি সাধন করা। এটি শুধু বাণিজ্য বা অর্থনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং সদস্য দেশগুলির সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশগত এবং নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়েও গভীরভাবে মনোনিবেশ করেছে। বিমসটেক আজকের দিনে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, যা দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতার মাধ্যমে সদস্য দেশগুলির জন্য উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।