Kalyani University Suggestion
Kalyani University B.A 5th Semester Bengali Minor Nep Suggestions 2026
বাংলা ছন্দ ও বাংলা অলংকার
Kalyani University B.A 5th Semester Bengali Minor Nep ছোট প্রশ্ন, বড়ো প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন PDF টি পেতে.. তুমি 150 টাকা পেমেন্ট কর। পেমেন্টের পর এক সেকেন্ডের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত সাজেশনটি পাবে। ধন্যবাদ। টাকা টি পেমেন্ট করার জন্য নিচে PAY বাটনে ক্লিক কর।
তুমি চাইলে সরাসরি PhonePe-এর মাধ্যমে 150 টাকা পেমেন্ট করে সাজেশন সংগ্রহ করতে পার। PhonePe নম্বর: 6295668424 (পেমেন্টের পর স্ক্রিনশট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠালে PDF COPY পাঠিয়ে দেব।)
My Phone Number- 6295668424
• এই সাজেশনের বড়ো প্রশ্ন সংখ্যা 29 টি।
ছোট প্রশ্ন প্রশ্নের উত্তর সহ কমপ্লিট সাজেশন পাবেন।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজেশনেরর বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজেশনের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট
অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.
এখানে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।
বাংলা ছন্দ ও বাংলা অলংকার
(সিলেবাস – ২০২৫)
পর্ব – ক : ছন্দ
ছন্দ সম্পর্কিত প্রাথমিক ধারণা : দল, মাত্রা, পর্ব, পঙক্তি, ছেদ, যতি, লয়, ছন্দের রূপভেদ ও ছন্দ নির্ণয়।
স্বরবৃত্ত ছন্দ, মাত্রাবৃত্ত ছন্দ, অক্ষরবৃত্ত ছন্দ (অমিত্রাক্ষর, সনেট, গদ্যকবিতার ছন্দ)।
পর্ব – খ : অলংকার
শব্দালঙ্কার : অনুপ্রাস, যমক, শ্লেষ, বক্রোক্তি।
অর্থালঙ্কার : উপমা, রূপক, উৎপ্রেক্ষা, অপহৃতি, সন্দেহ, নিশ্চয়, ব্যাজস্তুতি, বিরোধাভাস, ব্যতিরেক।
সম্পূর্ণ সাজেশন টি ইউটিউবে দেখানো হয়েছে তুমি দেখে আসতে পারো।
পর্ব – ক : ছন্দ
*****1) প্রশ্ন. দলবৃত্ত বা স্বরবৃত্ত ছন্দের বৈশিষ্ট্য উদাহরণসহ আলোচনা করো। (৫/১০)
ভূমিকা:
বাংলা কাব্যসাহিত্যে ছন্দ একটি অপরিহার্য অঙ্গ। ছন্দ ছাড়া কবিতা যেমন প্রাণহীন হয়ে যায়, তেমনি ছন্দ কবিতাকে দেয় সুর, গতি ও সৌন্দর্য। কবিতার শৈল্পিক রূপকে প্রকাশ করার জন্য কবিরা বিভিন্ন ধরনের ছন্দ ব্যবহার করেছেন। বাংলা ছন্দের মধ্যে অন্যতম হলো স্বরবৃত্ত ছন্দ, যাকে অনেক সময় দলবৃত্ত ছন্দ নামেও অভিহিত করা হয়। এই ছন্দ বাংলা কবিতার এক প্রাচীন ও জনপ্রিয় ছন্দরীতি। স্বরবৃত্ত ছন্দে শব্দ, মাত্রা ও ধ্বনির অনবদ্য সমন্বয়ের মাধ্যমে কবিতার সুরেলা সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।
এই আলোচনায় আমরা প্রথমে স্বরবৃত্ত ছন্দ বা দলবৃত্ত ছন্দের সংজ্ঞা দেব, এর বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিশদ আলোচনা করব এবং উদাহরণসহ তা ব্যাখ্যা করব।
স্বরবৃত্ত বা দলবৃত্ত ছন্দের সংজ্ঞা: স্বরবৃত্ত শব্দটি এসেছে "স্বর" ও "বৃত্ত" শব্দের যোগে। স্বর মানে হলো উচ্চারণযোগ্য অক্ষর বা ধ্বনি, আর বৃত্ত মানে নিয়ম বা ছাঁচ। অর্থাৎ স্বরবৃত্ত ছন্দ হলো সেই ছন্দ যেখানে পংক্তির অক্ষরসংখ্যা নির্দিষ্ট থাকে এবং প্রতিটি পংক্তি সেই নির্দিষ্ট ছাঁচ মেনে চলে। সরলভাবে বললে, পঙক্তিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক অক্ষরের পুনরাবৃত্তির ফলে যে ছন্দ সৃষ্টি হয় তাকে স্বরবৃত্ত ছন্দ বলে। এটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দের অন্তর্ভুক্ত হলেও এর নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
স্বরবৃত্ত ছন্দের বৈশিষ্ট্য:
১. অক্ষর গণনার উপর নির্ভরশীলতা: স্বরবৃত্ত ছন্দে প্রতিটি পঙক্তিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক অক্ষর থাকতে হয়। সাধারণত ৬, ৮, ১০, ১২ বা ১৪ অক্ষরের ছন্দ বেশি ব্যবহৃত হয়। পঙক্তিতে অক্ষর কম বা বেশি হলে ছন্দের গঠন ভেঙে যায়।
২. অক্ষরের সমতা ও নিয়ম: এই ছন্দে পঙক্তি যতবার পুনরাবৃত্তি হয়, প্রতিবার অক্ষরসংখ্যা সমান থাকতে হবে। যেমন— যদি প্রথম পঙক্তি ৮ অক্ষরের হয়, তবে দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ পঙক্তিও ৮ অক্ষরের হতে হবে।
৩. সমমিতি ও ছাঁচ: স্বরবৃত্ত ছন্দকে দলবৃত্ত বলা হয় কারণ এর প্রতিটি লাইন একটি নির্দিষ্ট দলের মতো গঠিত হয়। এই দল বা ছাঁচ বারবার পুনরাবৃত্তি করে পুরো কবিতা রচিত হয়।
৪. পঙক্তিভাগে শৈল্পিকতা: স্বরবৃত্ত ছন্দে সাধারণত একেকটি পঙক্তিকে সমান অক্ষরের খণ্ডে বিভক্ত করা হয়। যেমন— ৮ অক্ষরের ছন্দকে ৪+৪ অক্ষরে ভাগ করা যায়। এতে কবিতার উচ্চারণ ও পাঠে সহজতা আসে।
৫. তাল ও গতি: স্বরবৃত্ত ছন্দে একটি বিশেষ তাল ও গতি লক্ষ্য করা যায়। পাঠের সময় একটি ছন্দোবদ্ধ সুর বা রিদম তৈরি হয়। এই সুরেলা গতি শ্রোতাকে মোহিত করে।
৬. কাব্যে ব্যবহার: বাংলা কাব্যে স্বরবৃত্ত ছন্দ বহুল ব্যবহৃত হয়েছে। সহজ, সাবলীল ও সুরেলা হওয়ায় এই ছন্দে কবিতা লিখতে কবিরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন। শিশু কবিতা, গান, ছোটো কবিতা থেকে শুরু করে বড় রচনাতেও এর ব্যবহার দেখা যায়।
৭. ছন্দের প্রকারভেদ:
• ষটঅক্ষরী স্বরবৃত্ত (৬ অক্ষর)
• অষ্টঅক্ষরী স্বরবৃত্ত (৮ অক্ষর)
• দশঅক্ষরী স্বরবৃত্ত (১০ অক্ষর)
• দ্বাদশঅক্ষরী স্বরবৃত্ত (১২ অক্ষর)
• চতুর্দশঅক্ষরী স্বরবৃত্ত (১৪ অক্ষর)
স্বরবৃত্ত ছন্দের উদাহরণ:
(ক) ষটঅক্ষরী স্বরবৃত্ত: "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।"
👉 এখানে প্রতিটি লাইনে ৬টি অক্ষর রয়েছে।
(খ) অষ্টঅক্ষরী স্বরবৃত্ত: "বাদল দিনে মেঘের মাঝে
তুমি নেই গো কাছে কাছে।"
👉 প্রতিটি পঙক্তি ৮ অক্ষরের।
(গ) দশঅক্ষরী স্বরবৃত্ত: "যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়।"
👉 এখানে প্রতিটি লাইনে ১০টি অক্ষর আছে।
(ঘ) দ্বাদশঅক্ষরী স্বরবৃত্ত: "সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।"
👉 প্রতিটি লাইনে ১২টি অক্ষর ব্যবহৃত হয়েছে।
(ঙ) চতুর্দশঅক্ষরী স্বরবৃত্ত: "চল চল চল, ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল।"
👉 এখানে প্রতিটি লাইনে ১৪টি অক্ষর রয়েছে।
স্বরবৃত্ত ছন্দের ব্যবহারিক তাৎপর্য:
১. কাব্যে সুর ও সুষমা বৃদ্ধি: কবিতার গঠনকে সুরেলা ও শ্রুতিমধুর করে তোলে।
২. আবৃত্তিযোগ্যতা: এই ছন্দে লেখা কবিতা সহজে আবৃত্তিযোগ্য ও মুখস্থযোগ্য হয়।
৩. কবির ভাবপ্রকাশে সহায়ক: কবির ভাব, আবেগ, চিন্তা ও কল্পনা ছন্দের মাধ্যমে জীবন্ত হয়ে ওঠে।
৪. গান ও নাটকে প্রয়োগযোগ্য: স্বরবৃত্ত ছন্দের সংগীতধর্মিতা একে গান, নাটক, ছড়া ইত্যাদির জন্য উপযোগী করে তোলে।
৫. বাংলা ছন্দের ঐতিহ্য: স্বরবৃত্ত ছন্দ বাংলা কাব্যের একটি চিরন্তন ঐতিহ্য বহন করছে। প্রাচীন থেকে আধুনিক কাব্য পর্যন্ত এটি তার জনপ্রিয়তা বজায় রেখেছে।
স্বরবৃত্ত ছন্দের সীমাবদ্ধতা:
১. সব ধরনের গম্ভীর বা দার্শনিক ভাবপ্রকাশে এটি উপযুক্ত নয়।
২. অত্যধিক পুনরাবৃত্তির কারণে একঘেয়েমি আসতে পারে।
৩. মাত্রাবৃত্ত বা অক্ষরবৃত্ত ছন্দের তুলনায় এর প্রকাশভঙ্গি কিছুটা সীমিত।
উপসংহার: স্বরবৃত্ত বা দলবৃত্ত ছন্দ বাংলা কাব্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছন্দরীতি। এর সহজ সরল ধ্বনিবিন্যাস, অক্ষরের সুষম ভাগ ও সংগীতধর্মিতা কবিতাকে প্রাণবন্ত করে তোলে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুকান্ত প্রমুখ কবিরা এই ছন্দে অমর সৃষ্টি করেছেন। যদিও এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, তবুও বাংলা সাহিত্যে স্বরবৃত্ত ছন্দ আজও সমানভাবে জনপ্রিয়। বলা যায়, স্বরবৃত্ত ছন্দই বাংলা কবিতাকে সবচেয়ে বেশি ছন্দময়, প্রাণবন্ত ও শ্রুতিমধুর করে তুলেছে।
পর্ব – খ : শব্দালঙ্কার ও অর্থালঙ্কার
*****2) প্রশ্ন. যমক অলংকার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর। (৫)
উত্তর: বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অলংকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যমক অলংকারও এর একটি বিশেষ রূপ, যা ভাষার সৌন্দর্য এবং ছন্দকে আরও প্রগাঢ় করে তোলে। যমক শব্দটি সংস্কৃত ‘যমক’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘যমিত’ বা ‘দ্বৈততা’। সাধারণভাবে, যমক অলংকার বলতে আমরা সেই অলংকারকে বুঝি যেখানে একই ধ্বনি বা শব্দের পুনরাবৃত্তি ঘটানো হয়, কিন্তু তা ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে। সহজ কথায়, যমক হল শব্দের ধ্বনিগত মিল, কিন্তু তা অর্থগতভাবে ভিন্ন।
যমক অলংকার বাংলা কবিতা ও গদ্য উভয়েই ব্যবহৃত হয়। বিশেষত কবিতায় এর ব্যবহার পাঠক বা শ্রোতার মনকে আকর্ষণ করে এবং শব্দের ছন্দের মাধ্যমে ভাবের গভীরতা বৃদ্ধি করে। এটি সাহিত্যে অলঙ্কৃত রূপ ও অর্থের সমন্বয় ঘটায়।
যমক অলংকারের সংজ্ঞা: যমক অলংকারকে সংজ্ঞায়িত করলে বলা যায় – এটি একটি শব্দচালনা যা একই শব্দকে একাধিকবার ব্যবহার করে, কিন্তু প্রতিবার ব্যবহারের সময় তার অর্থ বা প্রয়োগ ভিন্ন হয়। অর্থাৎ, শব্দের বহুপদী অর্থকে ব্যবহার করে কাব্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়। বাংলায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অলংকার, যা কবিতার ছন্দ ও ভাব প্রকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা বলি –
“চোখের চোখে দেখিলাম চোখের জল।”
এখানে ‘চোখ’ শব্দটি তিনবার ব্যবহৃত হয়েছে। প্রথমবার এটি মানুষের দৃষ্টির অঙ্গ বোঝাচ্ছে, দ্বিতীয়বার এটি গহনায় বা দৃষ্টিপাত বোঝাচ্ছে, এবং তৃতীয়বার এটি স্নেহ বা আবেগের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এভাবেই যমক অলংকার শব্দের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করতে সহায়ক হয়।
যমক অলংকারের বৈশিষ্ট্য:
১. শব্দ বা ধ্বনির পুনরাবৃত্তি: যমকের মূল বৈশিষ্ট্য হল একই শব্দ বা ধ্বনি একাধিকবার ব্যবহার করা। তবে এখানে কৌশলটি হলো, পুনরাবৃত্ত শব্দগুলো ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করে।
২. অর্থগত ভিন্নতা: একই শব্দের পুনরাবৃত্তি হলেও অর্থ ভিন্ন হয়। অর্থাৎ, পাঠক শব্দের পুনরাবৃত্তি দেখে বিভ্রান্ত হয় না, বরং দুটি ভিন্ন ভাবের সঙ্গে পরিচিত হয়।
৩. ছন্দ ও তাল: যমক অলংকার কবিতার ছন্দ ও তালকে সুন্দর করে তোলে। এটি কবিতার প্রাকৃতিক রূপ এবং সঙ্গীতময়তা বৃদ্ধি করে।
৪. সাহিত্যিক সৌন্দর্য: যমক অলংকার ব্যবহার করলে ভাষার সৌন্দর্য ও শব্দচয়নের ক্ষমতা প্রকাশ পায়। এটি পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে।
যমক অলংকারের প্রকার: যমক অলংকারকে সাধারণভাবে দুটি প্রধান প্রকারে ভাগ করা যায়—
১. শব্দযমক (Word Yamak): এই প্রকারের যমকে একেই একে একই শব্দ বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ‘কৃষি’ শব্দটি কৃষকের কাজ বোঝাতে ব্যবহার হতে পারে, আবার কৃষ্ণের সাথে সম্পর্কিত ভাবেও ব্যবহার হতে পারে।
২. ধ্বনিযমক (Sound Yamak): এখানে ধ্বনির মিল ঘটানো হয় কিন্তু শব্দ ভিন্ন। এটি শব্দের আকার ভিন্ন হলেও উচ্চারণ বা ধ্বনি একই থাকে। এটি বিশেষত ছন্দবদ্ধ কবিতায় ব্যবহৃত হয়।
যমক অলংকারের উদাহরণ: যমক অলংকারের উদাহরণ বাংলায় অনেক। কিছু উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি আরও পরিষ্কার করা যায়।
১. কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায়: নজরুলের কবিতায় যমক অলংকার প্রায়শই দেখা যায়। যেমন—“চল চল চলি, চল চল পথের গান।” এখানে ‘চল’ শব্দের পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে, যা ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করছে—একটি ক্রিয়াকে নির্দেশ করছে, আর অন্যটি ছন্দ এবং আবেগের প্রকাশ করছে।
২. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায়: রবীন্দ্রনাথের কবিতায়ও যমক অলংকারের দারুণ উদাহরণ পাওয়া যায়। যেমন—“মন মোর মম” এখানে ‘ম’ ধ্বনির পুনরাবৃত্তি একাধিক অর্থ প্রকাশ করছে।
৩. সাধারণ উদাহরণ: “চোখের জল চোখে”—এখানে চোখের প্রয়োগ দুই ভিন্ন অর্থ বহন করছে, যা যমক অলংকারের স্পষ্ট উদাহরণ।
যমক অলংকারের উদ্দেশ্য ও ব্যবহার: ১. অর্থের গভীরতা বৃদ্ধি: পাঠকের কাছে একটি শব্দের দ্বৈত অর্থ প্রকাশ করে, যা কবিতার ভাবার্থকে আরও গভীর করে।
২. ছন্দ ও লয়: কবি ছন্দ ও তালে ভিন্ন মাত্রা যোগ করতে পারেন। এটি কবিতাকে সঙ্গীতময় করে তোলে।
৩. স্মরণশক্তি বৃদ্ধি: শব্দের পুনরাবৃত্তি এবং ভিন্ন অর্থ পাঠকের মনে সহজে বসে এবং কবিতা দীর্ঘস্থায়ী করে।
৪. সাহিত্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি: এটি কেবল অর্থগত নয়, বরং কবিতার সৌন্দর্য, শব্দচয়ন এবং ছন্দকে সমৃদ্ধ করে।
যমক অলংকারের গুরুত্ব: যমক অলংকার কেবল একটি অলংকার নয়, এটি ভাষার গঠন ও ছন্দের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিশেষত বাংলা কবিতায়, এটি ছন্দময়, মনোগ্রাহী এবং ভাবপ্রবণ করে তোলে। পাঠকের অনুভূতি এবং মনোযোগকে আকর্ষণ করে। এটি কবিতায় দ্ব্যর্থতা ও প্রতিসম ভাব প্রকাশের কার্যকর মাধ্যম।
উপসংহার: সংক্ষেপে, যমক অলংকার বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অলংকার। এটি একই শব্দ বা ধ্বনি ব্যবহার করে ভিন্ন অর্থ প্রকাশের মাধ্যমে কবিতার সৌন্দর্য, ছন্দ এবং অর্থবহতা বৃদ্ধি করে। কবি বা লেখক যখন ভাষার ক্ষমতা, ছন্দ ও ভাবের গভীরতা প্রকাশ করতে চান, তখন যমক অলংকার একটি কার্যকরী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। পাঠকের কল্পনাশক্তি উদ্দীপিত করে এবং সাহিত্যকর্মকে চিরস্থায়ী করে।