এখানে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী সাজানো আছে
University of Kalyani Suggestion
Political Science Major Long Question Answer
1st Semester
Political Science Major -1
Course Code: POL-M-T-1
(Understanding Political theory : Concept)
UNIT-1 রাজনীতির ধারণা
My Phone PAY Number- 6295668424
• এই সাজেশনের প্রশ্ন সংখ্যা 32 টি।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজেশনেরর বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজেশনের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.
PhonePe: পেমেন্টের পর স্ক্রিনশট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠালে আমরা PDF পাঠিয়ে দেব।
ওয়েবসাইটের Pay বাটন: সরাসরি পেমেন্ট করলে PDF অটোমেটিক তোমার ডিভাইসে ডাউনলোড হবে।
My Phone PAY Number- 6295668424
এখানে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।
UNIT-1 রাজনীতির ধারণা
****1) প্রশ্ন: ১) রাজনীতির ধারণাটি ব্যাখ্যা কর। ৫ অথবা রাজনীতির সংজ্ঞা দাও। অথবা রাজনীতির অর্থ ও প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা কর। ১০
উত্তর: রাজনীতি হ'ল একটি সার্বজনীন প্রক্রিয়া। কেউ পছন্দ করুক বা না করুক, আজ সকলেই কোনো না কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবেশের মধ্যে বসবাস করছেন। শয্যাতাগ থেকে শুরু করে শয়ন পর্যন্ত রাজনীতির সর্বগ্রাসী হাত থেকে আজ আর কারো নিস্তার নেই। তাই নাগরিক সমাজে আজ রাজনীতি প্রধান আলোচ্য বিবেচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে রাজনীতি কোনো নতুন ধারণা নয়। আবহমান কাল থেকেই রাজনীতির চর্চা চলে এসেছে।
রাজনীতির শব্দটি ইংরেজি প্রতিশব্দ 'Politics' শব্দটি গ্রীক শব্দ 'Polis' থেকে এসেছে। এর দ্বারা প্রাচীন গ্রিসের নগর রাষ্ট্রকে বোঝানো হত। এই সময় 'Politics' বলতে নগর রাষ্ট্রের জীবন জীবিকার সাথে যুক্ত নাগরিকদের কাজকর্ম ও তার সমস্যা সম্পর্কিত আলোচনাই হলো রাষ্ট্রনীতি বা রাজনীতি।
রাজনীতির অর্থ: সাধারণভাবে 'রাজনীতি' বলতে দলীয় রাজনীতি বোঝায় অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে মতাদর্শগত ও ক্ষমতা দখলের লড়াই, নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ কর্তৃক অনুসৃত কৌশল প্রভৃতিকে বোঝায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হেগ, হ্যারপ এবং ব্রেসলিনের মতে, রাজনীতি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে দলগুলো সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয়। তবে 'রাজনীতি' শব্দটি একাধিক অর্থে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যেমন-
রাজনীতির সংকীর্ণ অর্থ: সাধারণভাবে রাজনীতি বলতে দলীয় রাজনীতিকে বোঝায়। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলির নীতি, কর্মসূচী, নির্বাচনী কৌশল, ক্ষমতা দখলের লড়াই, সংসদ, মন্ত্রীসভা প্রভৃতি রাজনীতি হিসাবে চিহ্নিত হয়।
রাজনীতির ব্যাপক অর্থ: বর্তমান যুগে 'রাজনীতি' বলতে কেবল ক্ষমতা দখলের লড়াই, দলীয় নেতা-নেত্রীদের কৌশল বা দলীয় রাজনীতিকে বোঝায় না। আজকের দিনে মানবসমাজ ও মানবজীবনের কেন্দ্রে রয়েছে রাজনীতি। রাষ্ট্রীয় কাঠামো ছাড়াও রোজকার জীবনের প্রতি পর্যায়ে সর্বত্র রাজনীতির অস্তিত্ব বিদ্যমান। যেমন--পরিবার, বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়
রাজনীতির আধুনিক অর্থ: উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে মূলতঃ উনবিংশ শতকের আশির দশক থেকে রাজনীতি সম্পর্কে ধ্যানধারণার পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডেভিড ইস্টনের মতো আধুনিক চিন্তাবিদদের মতে সমাজে রাজনীতি হল বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের এক আন্তঃক্রিয়া যার মাধ্যমে সমাজের গতিশীলতা বজায় থাকে। জে.বি. ডি. মিলার তার দি নেচার অব পলিটিকস গ্রন্থে রাজনীতি বলতে বিরোধ ও বিরোধ মীমাংসার প্রক্রিয়াকেই বুঝিয়েছেন। অধ্যাপক আ্যালান বল- সমাজের দ্বন্দ্ব ও তার মীমাংসাকে রাজনীতি বলে অভিহিত করেছেন।
মন্তব্য: পরিশেষে উল্লেখ্য যে রাজনীতি কেবলমাত্র বিশেষ একধরণের বাস্তব-ব্যবহারিক ঘটনা প্রবাহ, প্রপঞ্চ-পরিস্থিতি বা আচরণকে বুঝিয়ে থাকে শুধু তাই নয়, রাজনীতিতে মতপার্থক্য, তর্ক-বিতর্ক, বিভেদ যেমন আছে ঠিক তেমনি সহমতও আছে। এই সকল বিষয়ের সুসংবদ্ধ, বিজ্ঞানসম্মত পর্যালোচনাই রাজনীতি। এককথায় বলা যায় যে কে, কি, কখন ও কিভাবে পায়? এই প্রশ্নের উত্তর রাজনীতি থেকে পাওয়া যায়।
রাজনীতির প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য::
(ক) বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনীতির ধারণা ব্যাখ্যা: অস্টিন রেনীও বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনীতির ধারণা বিচার-বিশ্লেষণ করেছেন। অস্টিনের অভিমত অনুসারে, পরস্পর বিরোধী স্বার্থ সাধনের ভিত্তিতে ব্যক্তিবর্গের মধ্যে যে-কোনো রকমের বিরোধের সৃষ্টি হতে পারে। তার মতানুসারে, রাজনীতি মতভেদ বা বিরোধের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কযুক্ত। যেখানে সামগ্রিকভাবে, সহমত বর্তমান, সেখানে রাজনীতির অস্তিত্ব অসম্ভব। রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বিরোধ বা সংঘর্ষ থেকেই। তবে নিলার এও বলেছেন যে, নীতি প্রণয়নের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কযুক্ত।
(খ) সহকারী কর্মধারী ও বিচারপতিরা রাজনৈতিক কার্যকলাপের সাথে যুক্ত: বল রাজনৈতিক কার্যকলাপের প্রকৃতি সম্পর্কিত উপরিউক্ত ধারণা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার জন্য দু-একটি উদাহরণের অবতারণা করেছেন। রাজনীতির বিচারে গ্রেট ব্রিটেনের সরকারি কর্মচারীদের নিরপেক্ষ মনে করা হয়। এক্ষেত্রে এই নিরপেক্ষতার কারণে সরকারি কর্মচারীরা কোনো রাজনৈতিক দলকে প্রকাশ্যে সমর্থন করতে পারেন না। আবার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তারা অনেক সময় নিজেদের মানান ও মূল্যবোধ প্রয়োগ করে থাকেন।
(গ) রাজনৈতিক কার্যকলাপের ক্ষেত্রে সর্বদলীয় সরকার বিভ্রান্তিমূলক: বলের অভিমত অনুসারে, রাজনৈতিক কার্যকলাপের ক্ষেত্রে সর্বদলীয় সরকার বিভ্রান্তিমূলক।
(ঘ) একদলীয় ব্যবস্থাতেও মতভেদ ও বিরোধ থাকে: বহু রাজনৈতিক দলের অস্তিত্বের পরিপ্রেক্ষিতে মতভেদ ও বিরোধের অস্তিত্ব প্রতিপন্ন হয়। অনুরূপভাবে একদলীয় ব্যবস্থার মধ্যেও মতভেদ ও বিরোধ থাকতে পারে।
(ঙ) সর্বসাধারণের স্বার্থের ধারণা রাজনৈতিক কার্যকলাপের বিরোধী: আ্যালান বলের অভিমত অনুসারে, সর্বসাধারণের স্বার্থের ধারণা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। কারণ রাজনৈতিক কার্যকলাপ মানেই হল বিরোধ ও তার মীমাংসা, সর্বজনীন স্বার্থের ধারণার মাধ্যমে একে উপেক্ষা করা হয়। রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও কার্যাবলির পরিপ্রেক্ষিতে সর্বসাধারণের স্বার্থের ধারণা সমালোচনামূলক।
(চ) সম্পদের অপ্রতুলতা থেকে রাজনৈতিক কার্যকলাপের সৃষ্টি: দেশের স্বার্থসাধনের জন্য একাধিক কার্যক্রম গ্রহণের বিষয় বিচার-বিবেচনার মধ্যে থাকতে পারে। বিভিন্ন বিকল্প কার্যক্রমের মধ্যে বাছাই করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় এবং রাজনৈতিক কার্যকলাপের সৃষ্টি হয়।
****2) প্রশ্ন: আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাজনীতির তাৎপর্য বা গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর। ৫
Ans: রাজনীতির তাৎপর্য (Significance of Politics) রাজনীতির তাৎপর্য সম্পর্কে হেউড অর্থবহ আলোচনা করেছেন। রাজনীতির অর্থ বা ব্যাখ্যা সম্পর্কিত বিতর্কসমূহ রাজনৈতিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ বিষয়ক বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অবহিত করে।
1. রাজনীতির ধারণা: রাজনীতি সম্পর্কিত সামাজিক বিজ্ঞানটির বিষয়বস্তুর আলোচনাক্ষেত্র এবং বৈশিষ্ট্যসূচক মাপকাঠি নির্ধারণ করে। রাজনীতির আলোচনা মূলগত বিচারে সরকারের আলোচনায় পরিণত হতে দেখা যায়। অথবা অধিকতর বিস্তারিত বিচার-বিবেচনায় এটি হল ইস্টন-এর কথায় 'মূল্যের কর্তৃত্বসম্পন্ন বরাদ্দ'।
2. রাজনীতির উপাদান: রাজনীতির উপাদান বা বিষয়বস্তু হিসাবে ক্ষমতা এবং সম্পদের বণ্টনকে যদি বিবেচনা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে রাজনীতির ঘটনা ঘটে পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে এবং স্কুল-কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সুতরাং সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের কেন্দ্র রাষ্ট্র থেকে সমাজে স্থানান্তরিত হয়।
3. বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি: রাজনীতি সম্পর্কিত বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির আওতায় আসে সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা বিষয়ক বিভিন্ন ধ্যান-ধারণা। রাজনীতির বেশ কিছু সংজ্ঞা সরকার পরিচালনার ধরন-ধারণ, জনসাধারণের বিষয়াদি বা শান্তিপূর্ণ সমঝোতার সঙ্গে সম্পর্কিত।
4. ক্ষমতা ও সম্পদের বণ্টন: রাজনীতির যে দৃষ্টিভঙ্গিতে ক্ষমতা ও সম্পদের বণ্টনের উপর জোর দেওয়া হয়, তা সমাজের দ্বন্দ্বমূলক মডেলের উপর ভিত্তিশীল। রাজনীতির এই দৃষ্টিভঙ্গিতে কাঠামোগত অসাম্য ও অন্যায় অবিচারের উপর জোর দেওয়া হয়।
5. নৈতিক প্রকৃতি: রাজনৈতিক কার্যাবলির নৈতিক প্রকৃতি প্রসঙ্গে মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয় এবং এটি শেষ করা যাবে কিনা ও তা এড় করা উচিত হবে কিনা, সেই বিষয়েও মতানৈক্য আছে। রাজনীতিকে সরকারের সঙ্গে সংযুক্ত করলে তা হবে নিকৃষ্ট ও ক্ষতিকর, কিন্তু প্রয়োজনীয়। আবার রাজনীতিকে জনসম্প্রদায়ের কাজকর্মের সঙ্গে এবং দ্বন্দ্ব মীমাংসার অহিংস উপায়ের সঙ্গে সংযুক্ত করলে, তা হবে সদর্থকভাবে উচ্চমূল্যমানযুক্ত ও মহত্মণ্ডিত।
একটি ক্রিয়া হিসাবে রাজনীতি এবং রাজনীতির চর্চা বা পাঠ্যবিষয় হিসাবে রাজনীতি বিজ্ঞানের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য বর্তমান। রাজনীতি বিজ্ঞানে বা রাষ্ট্রবিজ্ঞানে রাজনৈতিক কার্যকলাপের চর্চা বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয়। এই চর্চাকারীরা রাজনীতিবিদ নয়। রাজনৈতিক কার্যকলাপের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান বা বিচক্ষণতা এক ধরনের, অপরদিকে ব্যবহারিক রাজনৈতিক ক্রিয়াকর্মের জন্য আবশ্যক যোগ্যতা অন্য ধরনের।
UNIT-2 রাষ্ট্র, জাতি ও সার্বভৌমিকতা
****3) প্রশ্ন: সার্বভৌমিকতার একত্ববাদী তত্ত্বটি বিশ্লেষণ কর। (৫/১০)
সার্বভৌমিকতার একত্ববাদী তত্ত্ব: সার্বভৌমত্ব ধারণার উদ্ভব ইউরোপের নবজাগরণের ফলস্বরূপ। সার্বভৌমত্বের ঐতিহ্যবাহী ধারণাই হল একত্ববাদ, যা রাষ্ট্রের সার্বভৌমিকতাকে চরম, অবাধ, অসীম এবং অবিভাজ্য বলে প্রচার করে।
একত্ববাদী তত্ত্বের প্রবক্তারা: এই তত্ত্বের মূল প্রবক্তারা হলেন ফরাসি দার্শনিক বোদাঁ, ইংরেজ দার্শনিক হবস্, হিতবাদী ইংরেজ দার্শনিক বেন্থাম এবং ইংরেজ আইনবিদ জন অস্টিন প্রমুখ।
একত্ববাদের মূল বক্তব্য:
একত্ববাদের মূল বক্তব্য হল:
1. সার্বভৌমিকতা চরম, চূড়ান্ত, অবাধ ও অসীম। সার্বভৌমিকতা এক ও অবিভাজ্য।
2. রাষ্ট্র ছাড়া অন্য কেউ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হবে না।
3. রাষ্ট্রের নিজস্ব এলাকার মধ্যে সার্বভৌমের আদেশ বা নির্দেশই হবে আইন।
4. সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের আদেশ না মানলে শাস্তি পেতে হবে।
5. সার্বভৌম একজন অথবা কয়েকজন ব্যক্তির ওপর ন্যস্ত থাকে।
6. সার্বভৌম হল মানুষের অধিকারের উৎস।
বোদাঁর মতবাদ: ফরাসি দার্শনিক বোদা তার 'সিক্স বুকস্ অন দ্য রিপাবলিক' (Six Books on the Republic) গ্রন্থে বলেছেন, সার্বভৌমত্ব হল আইনের দ্বারা অনিয়ন্ত্রিত নাগরিক ও জনগণের ওপর রাষ্ট্রের চরম ক্ষমতা। তিনি সার্বভৌমত্বকে চরম (Absolute), চিরস্থায়ী (Perpetual) এবং আইনের দ্বারা অনিয়ন্ত্রিত বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন। তাই তিনি আইনকে বলেছেন "শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির নির্দেশ" (Command of the human superior)।
হবসের মতবাদ: ইংরেজ দার্শনিক টমাস হবস্ তার 'লেভিয়াথান' (Leviathan) গ্রন্থে একত্ববাদী সার্বভৌমত্বের তত্ত্ব আলোচনা করেছেন। তার মতে, প্রাকৃতিক রাজ্যের মানুষ চরম অরাজকতা ও ভয়াবহ অবস্থা থেকে রক্ষা পাবার জন্য নিজেদের মধ্যে চুক্তি করে সকল ক্ষমতা একজন মাত্র ব্যক্তি বা ব্যক্তি সংসদের হাতে অর্পণ করেছিল। এই ব্যক্তি বা ব্যক্তি সংসদ হলেন সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী রাজা চুক্তির দ্বারা আবদ্ধ হন না, তাই তিনি চুক্তির উর্ধ্বে অবস্থান করেন।
বেন্থামের মতবাদ: হিতবাদী ইংরেজ দার্শনিক বেন্থাম তার 'এ ফ্র্যাগমেন্ট অন গভর্নমেন্ট' (A Fragment on Government) গ্রন্থে সার্বভৌমিকতা সম্পর্কে একত্ববাদী বক্তব্য ব্যক্ত করেছেন। তার মতে, রাষ্ট্র সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী এবং এই ক্ষমতা চরম, চূড়ান্ত ও অসীম। তবে রাষ্ট্র ন্যায় অপেক্ষা অন্যায় বেশি করে তাহলে সেই রাষ্ট্রের বিরোধিতা করার নৈতিক অধিকার জনগণের থাকবে।
অস্টিনের তত্ত্ব: ইংরেজ আইনবিদ জন অস্টিন তার 'লেকচার্স অন জুরিসপ্রুডেন্স' (Lectures on Jurisprudence) গ্রন্থে একত্ববাদী সার্বভৌমিকতা তত্ত্বটি তুলে ধরেন। তিনি বলেছেন, যদি কোনো সমাজে নির্দিষ্ট মানবীয় কর্তৃপক্ষ অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুগত্য প্রদর্শন না করে এবং সমাজের অধিকাংশ মানুষের কাছ থেকে স্বভাবগত আনুগত্য লাভ করে, তবে সেই কর্তৃপক্ষ হল সার্বভৌম এবং উক্ত কর্তৃপক্ষসহ সমাজটি হল একটি রাজনৈতিক এবং স্বাধীন সমাজ। আইন হল সার্বভৌমের আদেশ মাত্র (The Command of the Sovereignty)।
সমালোচনা: সার্বভৌমত্বের একত্ববাদী তত্ত্ব নানাভাবে সমালোচিত হয়েছে:
1. রাষ্ট্র এককভাবে চূড়ান্ত ক্ষমতা ভোগ করতে পারে না।
2. সার্বভৌমই আইনের একমাত্র উৎস হতে পারে না।
3. সার্বভৌমের আদেশ ছাড়াও দেশে আরও বিভিন্ন রকমের আইন থাকে।
4. একত্ববাদ রাষ্ট্রের এক উর্ধ্বতন মানবীয় কর্তৃপক্ষকে সার্বভৌম বলে ধরে নিয়ে তাদের তত্ত্ব গড়ে তুলেছেন, কিন্তু রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকারের প্রশ্নটি গুরুত্ব পায়নি।
মন্তব্য: পরিশেষে, একত্ববাদ নানাভাবে সমালোচিত হলেও এর গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না। রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব নিয়ে সংকট তৈরি হলে, একত্ববাদীরা অসীম ক্ষমতা সম্পন্ন সার্বভৌমের কথা বলে সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
****4) প্রশ্ন: রাষ্ট্রের সংজ্ঞা দাও। রাষ্ট্রের প্রধান উপাদানগুলি সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর। (৫+৫=১০) অথবা রাষ্ট্রের সংজ্ঞা ও অপরিহার্য অঙ্গ বা অংশগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর। (৫/১০)
রাষ্ট্রের সংজ্ঞা: রাষ্ট্র হল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মূল কেন্দ্র, যার চারপাশেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সূচনা ও পরিসমাপ্তি। কিন্তু রাষ্ট্রের সঠিক সংজ্ঞা নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা একমত হতে পারেননি। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। যেমন--------------
ক) সাবেকি সংজ্ঞা: রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক অ্যারিস্টটল বলেছেন, "রাষ্ট্র হল স্বাবলম্বী ও পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে সংগঠিত কয়েকটি পরিবার ও গ্রামের সমষ্টি।" প্রাচীন গ্রিসের নগররাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে দেওয়া এই সংজ্ঞা আধুনিক রাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য নয়।
খ) আইনগত সংজ্ঞা: প্রখ্যাত আইনবিদ হল বলেছেন, "রাষ্ট্র হল এমন এক জনসমাজ যা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসাধনের জন্য স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত।" ওপেনহাইমের মতে, "যখন কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে একটি সংগঠিত জনসমষ্টি সার্বভৌম সরকার প্রতিষ্ঠা করে, তখন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়।" প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি উইলসন বলেন, "কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে আইন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগঠিত জনসমষ্টি হল রাষ্ট্র।"
গ) আধুনিক সংজ্ঞা: আধুনিক আচরণবাদী চিন্তাবিদরা প্রচলিত সংজ্ঞাগুলি মেনে নেন না। বরং তারা 'রাষ্ট্র' শব্দটির পরিবর্তে 'রাজনৈতিক ব্যবস্থা' পরিভাষাটি ব্যবহার করেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বার্জেস ও বুন্টসলির মতে, একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত জনসমষ্টি হল রাষ্ট্র।
ঘ) মার্কসবাদী সংজ্ঞা: মার্কসবাদীরা বলেন, রাষ্ট্র হল শ্রেণি শোষণের হাতিয়ার; এক শ্রেণি দ্বারা অন্য শ্রেণির ওপর প্রভুত্ব বজায় রাখার প্রতিষ্ঠান।
ঙ) গার্নারের সংজ্ঞা: গার্নার বলেন, "রাষ্ট্র হল সাধারণভাবে বৃহৎ এক জনসমাজ যা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করে, যা বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত এবং যার একটি সুসংগঠিত সরকার রয়েছে ও সেই সরকারের প্রতি অধিকাংশ জনগণ আনুগত্য প্রদর্শন করে।"
রাষ্ট্রের অপরিহার্য উপাদান: গার্নারের সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে রাষ্ট্রের পাঁচটি মূল উপাদানের পরিচয় পাওয়া যায়: (i) জনসমষ্টি, (ii) নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, (iii) সুসংগঠিত সরকার, (iv) সার্বভৌমত্ব এবং (v) স্থায়িত্ব।
i) জনসমষ্টি: রাষ্ট্রের প্রথম অপরিহার্য উপাদান হল জনসমষ্টি। রাষ্ট্র একটি মানবিক প্রতিষ্ঠান এবং জনসমষ্টি ছাড়া রাষ্ট্র কল্পনা করা যায় না। রাষ্ট্রের জনসমষ্টিকে চার ভাগে ভাগ করা যায়: পূর্ণ নাগরিক, অসম্পূর্ণ নাগরিক, বিদেশি, ও প্রজা।
ii) নির্দিষ্ট ভূখণ্ড: জনসমাজটিকে একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে হবে। বেদুইনদের মতো ভ্রাম্যমাণ যাযাবর গোষ্ঠীকে নিয়ে রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইহুদিদের কোনো রাষ্ট্র ছিল না, কিন্তু ইজরাইল রাষ্ট্র গঠনের পর তাদের একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ড হল।
iii) সরকার বা শাসনব্যবস্থা: রাষ্ট্রের জনসমষ্টিকে সুসংবদ্ধ ও রাজনৈতিকভাবে সংঘবদ্ধ হতে হবে। সরকারই জনসমাজকে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত করে। সরকার ছাড়া রাষ্ট্রের কল্পনা অসম্ভব। উইলোবি বলেছেন, "সরকার হল একটি প্রতিষ্ঠান বা যন্ত্র যার মাধ্যমে রাষ্ট্র তার ইচ্ছাকে গঠন ও কার্যকর করে।"
iv) সার্বভৌমত্ব: সার্বভৌমিকতা রাষ্ট্রের প্রাণশক্তি। জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড এবং সরকার থাকলেও সার্বভৌমিকতা ছাড়া রাষ্ট্রের সৃষ্টি হতে পারে না। গেটেলের মতে, "সার্বভৌমত্বের ধারণাই হল আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি।" ১৯৪৭ সালের আগে ভারতের সার্বভৌমিকতা না থাকায় তাকে রাষ্ট্র বলা যেত না, কিন্তু ১৫ই আগস্টের পর ভারত সার্বভৌমিকতার অধিকারী হয়ে রাষ্ট্র আখ্যা লাভ করে।
v) স্থায়িত্ব: স্থায়িত্ব রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ক্ষণস্থায়ী কোনো প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্র হিসাবে গণ্য হতে পারে না। রাষ্ট্র সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং এর ধারাবাহিকতা থাকে। সরকারের পরিবর্তন হলেও রাষ্ট্রের ধারাবাহিকতার কোনো ক্ষতি হয় না।
মূল্যায়ন: আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ছাড়া কোনো দেশ রাষ্ট্র হিসাবে গণ্য হয় না। যখন একটি দেশ অন্যান্য রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ করে তখনই সেই দেশ রাষ্ট্র হিসাবে গণ্য হয়। ইজরায়েল আজও অনেক দেশের স্বীকৃতি পায়নি। যেসব দেশ ইজরায়েলকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি জানায়নি, তাদের কাছে ইজরায়েল রাষ্ট্র হিসাবে গণ্য হয় না।
UNIT-3 আইন, স্বাধীনতা ও সাম্য
****5) প্রশ্ন: স্বাধীনতার সংজ্ঞা দাও? স্বাধীনতার রক্ষা কবজ গুলি সংক্ষেপে আলোচনা কর?৫ (২০২২)
স্বাধীনতার সংজ্ঞা:
স্বাধীনতা হচ্ছে সেই অবস্থা যখন কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার রাখে এবং নিজের জীবনের পথে নিজে চলার ক্ষমতা পায়। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে কোনো ব্যক্তি বা জাতি নিজস্ব বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে জীবনযাপন করতে পারে। স্বাধীনতা ব্যক্তিগত অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা সহ বিভিন্ন দিক থেকে নির্ধারিত হয়।
স্বাধীনতা শুধু একটি শারীরিক অবস্থা নয়, এটি মানসিক ও সামাজিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তি যখন স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারে এবং নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারে, তখনই তার প্রকৃত স্বাধীনতা প্রকাশ পায়।
স্বাধীনতার রক্ষা কবজ:
স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে তা রক্ষা করা অনেক বেশি কঠিন। স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে কিছু বিশেষ উপাদান এবং পন্থার প্রয়োজন হয়। স্বাধীনতার রক্ষা কবজগুলি হলো:
১. গণতন্ত্র: গণতন্ত্র একটি প্রধান রক্ষা কবজ যা স্বাধীনতা রক্ষা করে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রত্যেক নাগরিকের মতামত ও অধিকার সমানভাবে গুরুত্ব পায়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমে নাগরিকরা তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে এবং তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে।
২. আইনের শাসন: আইনের শাসন এমন একটি কাঠামো প্রদান করে যার মাধ্যমে প্রতিটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আইন মেনে চলতে বাধ্য থাকে। এটি নিশ্চিত করে যে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং প্রত্যেকেই ন্যায়বিচারের অধিকার পায়।
৩. মানবাধিকার: মানবাধিকার স্বাধীনতার অপরিহার্য একটি অংশ। প্রত্যেক ব্যক্তির জন্মগত অধিকার থাকে যা তাকে মর্যাদার সাথে বাঁচতে সাহায্য করে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কাজের সুযোগ ইত্যাদি মানবাধিকার স্বাধীনতার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
৪. মত প্রকাশের স্বাধীনতা: মত প্রকাশের স্বাধীনতা একটি সমাজে স্বাধীনতা রক্ষার অন্যতম উপায়। এটি ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর মধ্যে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা তৈরি করে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকলে ব্যক্তি তার মতামত ও চিন্তাধারা প্রকাশ করতে পারে যা সমাজের উন্নয়নে সহায়ক হয়।
৫. শিক্ষা: শিক্ষা মানুষের মধ্যে সচেতনতা এবং সমঝোতা বৃদ্ধি করে যা স্বাধীনতার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষা ব্যক্তি ও সমাজকে স্বাধীনতার গুরুত্ব এবং তা রক্ষার উপায় সম্পর্কে সচেতন করে।
৬. সুশাসন: সুশাসন নিশ্চিত করে যে রাষ্ট্রের প্রতিটি বিভাগ সঠিকভাবে কাজ করছে এবং জনগণের অধিকার রক্ষা করছে। সুশাসন এমন একটি কাঠামো গঠন করে যেখানে দুর্নীতি, অবিচার এবং নিপীড়ন প্রতিহত হয়।
৭. সামাজিক ন্যায়বিচার: সামাজিক ন্যায়বিচার স্বাধীনতার রক্ষায় একটি অপরিহার্য উপাদান। এটি নিশ্চিত করে যে প্রতিটি ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী সমান অধিকার এবং সুযোগ পায়। সামাজিক ন্যায়বিচার একটি সমতা এবং ন্যায্যতার পরিবেশ তৈরি করে।
৮. অর্থনৈতিক স্বাধীনতা: অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ব্যক্তি এবং সমাজকে স্বাধীনতার সঠিক ব্যবহারে সক্ষম করে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকলে ব্যক্তি তার জীবনের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারে এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে।
স্বাধীনতা অর্জন ও রক্ষা করার জন্য এই রক্ষা কবজগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলি একসাথে কাজ করে একটি সমাজ বা রাষ্ট্রকে সুষ্ঠু ও সমৃদ্ধশালী করে তোলে। তাই স্বাধীনতা রক্ষায় প্রতিটি নাগরিকের সচেতনতা ও সহযোগিতা অপরিহার্য।
***6) প্রশ্ন: আইনের সংজ্ঞা ও প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা কর?৫
আইনের সংজ্ঞা ও প্রকৃতি:
আইন একটি সমাজের নৈতিক এবং সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রণীত নিয়ম এবং নিয়ন্ত্রণের একটি সেট। এটি মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত করার জন্য প্রয়োগ করা হয়। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আইনের সংজ্ঞা এবং প্রকৃতি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করা যায়।
আইনের সংজ্ঞা :
আইনের বিভিন্ন সংজ্ঞা রয়েছে, যা সময় এবং পরিবেশ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়েছে। কিছু প্রখ্যাত সংজ্ঞা নিচে আলোচনা করা হল:
১. অস্টিনের সংজ্ঞা: জন অস্টিন আইনকে "শাসক বা সার্বভৌম কর্তৃক জনগণের প্রতি আদেশের একটি সেট" হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তার মতে, আইন হচ্ছে একটি আদেশ যা শাসক কর্তৃক জারি করা হয় এবং জনগণ তা মানতে বাধ্য থাকে।
২. হল্যান্ডের সংজ্ঞা: হল্যান্ড আইনের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, "আইন হলো রাষ্ট্র কর্তৃক প্রয়োগকৃত সেই সব নিয়মাবলী যা মানুষের বাহ্যিক কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করে।"
৩. সালমন্ডের সংজ্ঞা: জন সালমন্ড আইনের সংজ্ঞা দিয়েছেন এইভাবে: "আইন হল সেই সব নীতিমালা এবং নিয়মাবলী যা বিচারালয় দ্বারা প্রয়োগ এবং মান্য করা হয়।"
আইনের প্রকৃতি :
আইনের প্রকৃতি বিভিন্ন দিক থেকে বোঝা যায়। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিচে আলোচনা করা হল:
১. বাধ্যতামূলকতা: আইনের একটি মূল বৈশিষ্ট্য হলো এর বাধ্যতামূলকতা। আইন লঙ্ঘন করলে শাস্তির ব্যবস্থা থাকে, যা জনগণকে আইন মানতে বাধ্য করে।
২. সামাজিক নিয়ন্ত্রণ: আইন সামাজিক নিয়ন্ত্রণের একটি প্রধান মাধ্যম। এটি সমাজের সদস্যদের মধ্যে শৃঙ্খলা ও শৃঙ্খলাবোধ সৃষ্টি করে এবং সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৩. প্রতিফলনশীলতা: আইন সমাজের মূল্যবোধ এবং নৈতিকতার প্রতিফলন। এটি সমাজের চাহিদা এবং মূল্যবোধ অনুযায়ী প্রণীত হয় এবং পরিবর্তিত হয়।
৪. বিশেষায়িত সংস্থা: আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগের জন্য বিশেষায়িত সংস্থা থাকে, যেমন বিচারালয়, পুলিশ, এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।
৫. স্থিতিশীলতা এবং পরিবর্তনশীলতা: আইন একদিকে স্থিতিশীলতার প্রতীক, অন্যদিকে এটি পরিবর্তনশীলও হতে পারে। সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে আইনের পরিবর্তনও আবশ্যক হয়ে পড়ে।
৬. সুশাসনের মাধ্যম: আইন সুশাসনের প্রধান মাধ্যম। এটি শাসক এবং শাসিত উভয়ের জন্য নিয়মাবলী নির্ধারণ করে এবং শাসনের প্রক্রিয়াকে সুশৃঙ্খল করে।
আইনের প্রকারভেদ :
আইনের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে, যা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকারভেদ নিচে আলোচনা করা হল:
১. অপরাধ আইন: অপরাধ আইন সেই সব নিয়মাবলী যা অপরাধ নির্ধারণ এবং অপরাধীদের শাস্তি প্রদানে ব্যবহৃত হয়।
২. দেওয়ানি আইন: দেওয়ানি আইন হলো সেই সব নিয়মাবলী যা ব্যক্তিগত অধিকার এবং দায়িত্ব নির্ধারণ করে এবং দেওয়ানি বিরোধ নিষ্পত্তিতে ব্যবহৃত হয়।
৩. প্রশাসনিক আইন: প্রশাসনিক আইন রাষ্ট্রের প্রশাসনিক সংস্থাগুলির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রশাসনিক বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রদান করে।
উপসংহার :
আইন একটি জটিল এবং বহুমাত্রিক ধারণা যা সমাজের বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা, এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অপরিহার্য। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আইনের সংজ্ঞা এবং প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা যেতে পারে, তবে এর মূল বৈশিষ্ট্য এবং গুরুত্ব সবসময় অপরিবর্তিত থাকে।
UNIT-4 রাজনীতির ধারণা
***7) প্রশ্ন: সামাজিক অধিকার সম্পর্কে আলোচনা কর।৫
ভূমিকা: সামাজিক অধিকার হলো মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা সমাজে বসবাসকারী প্রতিটি ব্যক্তির ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা নিশ্চিত করে। এটি রাষ্ট্র, সমাজ ও সরকারের দায়িত্ব যে, প্রতিটি নাগরিক যেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, বাসস্থান ও আইনি সহায়তা পায়। সামাজিক অধিকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অপরিহার্য এবং একটি সুস্থ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে সহায়তা করে।
সামাজিক অধিকার কী?
সামাজিক অধিকার বলতে সেই সমস্ত অধিকারকে বোঝায় যা মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও মৌলিক চাহিদা পূরণের সাথে সম্পর্কিত। এটি ব্যক্তির ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে। জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র (UDHR) এবং বিভিন্ন দেশের সংবিধানে সামাজিক অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক অধিকারের প্রকারভেদ:
১. শিক্ষার অধিকার: শিক্ষা হলো মানব উন্নয়নের মূল ভিত্তি। প্রতিটি শিশুর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভের অধিকার রয়েছে। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ সচেতন, দক্ষ ও আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে শিক্ষা প্রদান করা এবং শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।
২. স্বাস্থ্যসেবার অধিকার: সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য স্বাস্থ্যসেবা একটি মৌলিক অধিকার। সরকারের উচিত সকল নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে বা সাশ্রয়ী মূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা। স্বাস্থ্যসেবার অভাবে সমাজে দারিদ্র্য ও অসমতা বৃদ্ধি পায়।
৩. কর্মসংস্থানের অধিকার: প্রত্যেক মানুষের ন্যায্য মজুরিতে কাজ করার অধিকার রয়েছে। বেকারত্ব দূরীকরণ, শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও ন্যায্য বেতন নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। শ্রম আইন মেনে চলা এবং কাজের ন্যায্য পরিবেশ তৈরি করা সামাজিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।
৪. বাসস্থানের অধিকার: নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত আবাসন মানুষের মৌলিক চাহিদা। রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব হলো গৃহহীনতা দূর করা এবং সবার জন্য সহজলভ্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা।
৫. সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার: বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, অসহায় ও দুস্থ ব্যক্তিদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি প্রয়োজন। পেনশন, ভাতা ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা যায়।
৬. আইনি সহায়তার অধিকার: ন্যায়বিচার পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। দরিদ্র ও অসহায় মানুষ যেন আইনি সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সামাজিক অধিকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
সামাজিক অধিকার বাস্তবায়নের গুরুত্ব:
১. দারিদ্র্য হ্রাস: সামাজিক অধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য কমে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।
২. সমতা প্রতিষ্ঠা: এটি নারী, শিশু, আদিবাসী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সহায়তা করে।
৩. শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠন: যখন সবাই তাদের মৌলিক অধিকার ভোগ করে, তখন সামাজিক সংঘাত কমে।
৪. মানব উন্নয়ন: শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পেলে মানুষের সক্ষমতা বাড়ে।
সামাজিক অধিকার বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ:
• অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা: দরিদ্র দেশগুলিতে সামাজিক অধিকার পূরণে বাজেটের অভাব দেখা যায়।
• রাজনৈতিক অস্থিরতা: কিছু দেশে সুশাসনের অভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা যায় না।
• সচেতনতার অভাব: অনেক মানুষ তাদের অধিকার সম্পর্কে জানে না, ফলে তারা সুবিধা পায় না।
• দুর্নীতি: সরকারি সহায়তা প্রাপ্তিতে দুর্নীতির কারণে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হয়।
সামাজিক অধিকার রক্ষায় করণীয়:
১. সরকারকে নীতিমালা শক্তিশালী করতে হবে এবং বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
২. জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে নাগরিক সমাজ ও মিডিয়াকে এগিয়ে আসতে হবে।
৩. সুশাসন নিশ্চিত করে দুর্নীতি রোধ করতে হবে।
৪. আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সহযোগিতা নিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদার করতে হবে।
উপসংহার:
সামাজিক অধিকার মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য। এটি শুধু রাষ্ট্রের দায়িত্বই নয়, সমাজের প্রতিটি সদস্যেরও দায়িত্ব যে সবাই যেন তাদের অধিকার ভোগ করতে পারে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও আইনি সহায়তা নিশ্চিত করে একটি উন্নত ও সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে সরকার, নাগরিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে একসাথে কাজ করতে হবে।
UNIT-5 গণতন্ত্র, কর্তৃত্ববাদ ও নাগরিকতা
***8) প্রশ্ন: গণতন্ত্র সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।৫
ভূমিকা: গণতন্ত্র (Democracy) একটি জনপ্রিয় শাসনব্যবস্থা, যেখানে জনগণই রাষ্ট্রের প্রকৃত শাসক। এই ব্যবস্থায় জনগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকার গঠন ও নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ করে। "গণতন্ত্র" শব্দটি গ্রিক শব্দ Demos (জনগণ) ও Kratos (শক্তি বা শাসন) থেকে উদ্ভূত, অর্থাৎ "জনগণের শাসন"। বর্তমান বিশ্বে গণতন্ত্রকে সর্বোত্তম শাসনব্যবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কারণ এটি স্বাধীনতা, সমতা ও ন্যায়বিচারের নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত।
গণতন্ত্রের সংজ্ঞা:
বিশিষ্ট পণ্ডিতদের মতে:
• আব্রাহাম লিংকন: "গণতন্ত্র হলো জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য এবং জনগণের সরকার।"
• লর্ড ব্রাইস: "গণতন্ত্র এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে সরকারের ক্ষমতা জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকে।"
সহজ ভাষায়, গণতন্ত্র হলো এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে নাগরিকরা ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে এবং সেই প্রতিনিধিরা জনগণের ইচ্ছানুযায়ী দেশ পরিচালনা করে।
গণতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য:
১. জনগণের সার্বভৌমত্ব: গণতন্ত্রে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস।
২. নির্বাচন: স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠিত হয়।
৩. মৌলিক অধিকার: বাকস্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সমতার অধিকার নিশ্চিত করা হয়।
৪. দায়িত্বশীল সরকার: সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য।
৫. সহনশীলতা: রাজনৈতিক মতপার্থক্যকে সম্মান করা হয়।
৬. স্বাধীন বিচারব্যবস্থা: ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত থাকে।
৭. সংবাদপত্রের স্বাধীনতা: গণমাধ্যম সরকারের কাজের সমালোচনা করতে পারে।
গণতন্ত্রের প্রকারভেদ:
(১) প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র: এই ব্যবস্থায় জনগণ সরাসরি শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে। প্রাচীন গ্রিসে এই পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। তবে বর্তমানে এটি কেবল ছোট সম্প্রদায় বা স্থানীয় পর্যায়ে সম্ভব।
(২) পরোক্ষ গণতন্ত্র (প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র): আধুনিক রাষ্ট্রগুলোতে জনগণ প্রতিনিধি নির্বাচন করে, যারা তাদের পক্ষে শাসনকার্য পরিচালনা করে। যেমন: সংসদীয় গণতন্ত্র (বাংলাদেশ, ভারত) ও রাষ্ট্রপতিশাসিত গণতন্ত্র (যুক্তরাষ্ট্র)।
(৩) একদলীয় ও বহুদলীয় গণতন্ত্র:
• একদলীয় গণতন্ত্র: একটিমাত্র দল ক্ষমতায় থাকে (যেমন: চীন, যদিও তা প্রকৃত গণতন্ত্র নয়)।
• বহুদলীয় গণতন্ত্র: বিভিন্ন দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে (যেমন: ভারত, যুক্তরাজ্য)।
গণতন্ত্রের সুবিধা:
• জনগণের অংশগ্রহণ: নাগরিকরা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে ভূমিকা রাখে।
• স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষা: মৌলিক অধিকার সংরক্ষিত হয়।
• দায়িত্বশীল শাসন: সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা কমে।
• সামাজিক উন্নয়ন: শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির অগ্রগতি ঘটে।
• শান্তিপূর্ণ পরিবর্তন: নির্বাচনের মাধ্যমে শাসক পরিবর্তন সম্ভব।
গণতন্ত্রের অসুবিধা:
• ধীরগতির সিদ্ধান্ত: আলোচনা ও বিতর্কে সময় লাগে।
• অযোগ্য নেতৃত্ব: কখনো কখনো অদক্ষ নেতা নির্বাচিত হয়।
• গোষ্ঠীস্বার্থ: শক্তিশালী গোষ্ঠী সরকারকে প্রভাবিত করতে পারে।
• জনমতের অস্থিরতা: জনগণের আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্ত ক্ষতিকর হতে পারে।
গণতন্ত্র বনাম অন্যান্য শাসনব্যবস্থা:
গণতন্ত্র |
একনায়কতন্ত্র |
রাজতন্ত্র |
জনগণের শাসন |
এক ব্যক্তির শাসন |
রাজার শাসন |
স্বাধীন নির্বাচন |
কোনো নির্বাচন নেই |
বংশানুক্রমিক ক্ষমতা |
অধিকার সংরক্ষিত |
নাগরিক অধিকার হরণ |
প্রজাদের সীমিত অধিকার |